• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘চুক্তি থেকে বাদ মানে জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হওয়া নয়’


ক্রীড়া প্রতিবেদক এপ্রিল ১৯, ২০১৮, ০৪:১৯ পিএম
‘চুক্তি থেকে বাদ মানে জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হওয়া নয়’

ঢাকা: বার্ষিক দুই কোটি রুপি বেতনেও সন্তুষ্ট ছিলেন না ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তাঁদের অনুযোগ ছিল, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা এর চেয়ে অনেক বেশি বেতন পান। গত বছর অন্দোলনের হুমকির পরিপেক্ষিতে ধোনি-কোহলিদের বেতন বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সেই তুলনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বেতন খুব বেশি নয়।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ মাসিক বেতন আড়াই লাখ টাকার মতো। গত বছর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারের সংখ্যা ছিল ১৬ জন। সেখান থেকে ১০ জনকে রেখে ৬ জনকে বাদ দিয়েছে বিসিবি। তারা হলেন; সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, কামরুল ইসলাম, ইমরুল কায়েস এবং তাসকিন আহমেদ। তাদের মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক।  

তবে চুক্তি থেকে বাদ পড়াদের সাহস যোগাচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি মনে করেন বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া মানে জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। চুক্তির বাইরে থেকেও খেলা যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সৌম্য, তাসকিন, সাব্বিরদের সামনে সে সুযোগ থাকছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে তাঁদের সামনে একটা পথই খোলা, ধারাবাহিক ভালো খেলা।

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসির সঙ্গে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, যত দিন ধরে খেলছি, বেতনের ভেতর আছি কি নেই, এসব নিয়ে ভাবিনি। আমার কাছে এটা কখনোই পরিষ্কার নয়। আমার সব সময়ই প্যাশন ছিল ক্রিকেট খেলা। ওই প্যাশন নিয়ে ক্রিকেট খেলছি।’

মাশরাফি বলেন, ‘বেতন একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশির ভাগ খেলোয়াড় এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। পরিবারের ওপর বেতন বা তার খেলার বিরাট প্রভাব থাকে। তবে সিদ্ধান্তটা বোর্ডের। কজনকে বেতন দেবে না দেবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত। একটা খেলোয়াড়ের জন্য বেতন (চুক্তিতে থাকা) গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে তাকে ততটুকু আবেগ দিয়েও খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস, সবাই সেভাবে খেলছে। পারফরম্যান্স সব সময়ই একই গ্রাফে চলে না। কারও কখনো ভালো যায়, কারও কখনো খারাপ। বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে পারফরম্যান্সের ওপর, এটাও সত্য।’

ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, বাদ পড়া ক্রিকেটাররা যেন এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে তাঁরা সব সহযোগিতাই করবেন, ‘তারা বাংলাদেশ দলের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ, তাদের সমর্থন করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। আমার জায়গা থেকে আমি পিছপা হব না। যত প্রকার সমর্থন দেয়ার তাদের দেব।’

বাংলাদেশে খুব বেশি বিকল্প খেলোয়াড় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে যদি তারা ফর্মে ফিরে আসে, লম্বা সময় ধরে তারা বাংলাদেশকে সেবা দিতে পারবে। একসময় সাকিব-তামিম বা আমরা এমনই ছিলাম। বলতে পারেন, ওই সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটা ছিল না বলে আমরা টিকে গেছি। তাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক। একটু খারাপ করলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সোচ্চার হয়ে ওঠে। ২২-২৩ বছর বয়সে এত সমালোচনা নিয়ে ধারাবাহিক ভালো খেলা অনেক চ্যালেঞ্জিং। কারও বেড়ে ওঠাও তো এত পেশাদারির মধ্যে হয় না। আমরা সিনিয়ররা যারা আছি, তাদের সহযোগিতা করব। তাদেরও চেষ্টা করতে হবে, তারা যেন নিজেদের সেরা ফর্মে আসতে পারে।’

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাশরাফি এবং আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মমিনুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের জিএম এন্ড হেড অব বিজনেস রিজওয়ান ডি শামস, হেড অব ব্র্যান্ড এন্ড কর্পোরেট কমিউনিকেশন মাহজাবীন ফেরদৌসসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

চুক্তির অধীনে, নড়াইল জেলায় খেলাধুলার প্রশিক্ষণ প্রদানে নড়াইল এক্সপ্রেস যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তাতে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এক্সক্লুসিভ পার্টনার হিসেবে থাকবে। নড়াইলে সেরা মানের খেলাধুলার প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিত করতে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড নড়াইল এক্সপ্রেসকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ফাউন্ডেশনটি একটি ক্রিকেট ও ফুটবল একাডেমি দিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। এতে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৬০ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!