• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চৈত্রসংক্রান্তি মেলা : গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতি


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৩, ২০১৬, ০৯:৩৯ এএম
চৈত্রসংক্রান্তি মেলা : গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতি

সোনালীনিউজ ডেস্ক

চৈত্রসংক্রান্তি মেলা আবহমান গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য। বাংলা বর্ষের শেষ লগ্নে অর্থাৎ চৈত্রের শেষ দিন গ্রামে গ্রামে জমত এ মেলা। সময়ের স্রোতে হারানো বহু লোকজধারার মতোই চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপনের রেওয়াজ এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। 

চৈত্রসংক্রান্তি মেলা লোক উৎসববিশেষ। প্রধানত হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব এটি। বাংলা সনের শেষ দিনটিকে বলা হয় সংক্রান্তি। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যজনক বলে মনে করা হয়। চৈত্রসংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। এর সঙ্গে চলে গাঁজনের মেলা।

বাংলার লোকসংস্কৃতির বিশেষ উপাদানে পরিগণিত হয়েছে চৈত্রসংক্রান্তির এসব আয়োজন। বছরের বিদায়বেলায় মানুষ সাধারণত অতীতের সব গ্লানি, ব্যর্থতা, রোগ-শোক, বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির প্রত্যাশা করে। মনে আশা থাকে নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ, শান্তি, সচ্ছলতা। এর ওপর ভিত্তি করেই কৃষিভিত্তিক এই জনপদে চৈত্রসংক্রান্তির আচার-আয়োজনগুলোর উদ্ভব হয়েছিল।

এসব লৌকিক, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে বছরের শেষ দিনটিতে গ্রামাঞ্চলে ঘরদোর লেপা-পোছা, বিশেষত সকালবেলায় ঘর পরিচ্ছন্ন করা ও গরু-বাছুরের গা ধুইয়ে দেওয়ার রীতি প্রচলিত। এ সময়টায় উদরাময়, চর্মরোগ এসবের প্রকোপ বাড়ে। তাই বছরের শেষ দিনে নিরামিষ ও তেতো খাওয়ার চল রয়েছে। এককালে সাত রকমের তেতো শাকের বিভিন্ন পদ রান্না হতো। মেয়ে-জামাইকে নাইওর আনা, নতুন পোশাক-আশাক উপহার দেওয়ার রীতিও চালু ছিল গ্রামাঞ্চলে। 

দিন বদলেছে, এসব রীতি-রেওয়াজ এখন প্রায় উঠেই গেছে। তবে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা চালু আছে অনেক অঞ্চলে। এলাকাভেদে সংক্রান্তির মেলা একদিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলে। ঐতিহ্যবাহী কারুপণ্য, খাজা-গজা প্রভৃতির সমারোহ ঘটে গ্রামীণ মেলাগুলোতে। মেলাকে কেন্দ্র করেই এখন মুখর হয়ে ওঠে চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব। দীর্ঘকাল আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বহু স্থানে এ উপলক্ষে মেলা বসে।

বাংলাদেশের হিন্দুপ্রধান অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক, মাটি ও ধাতুর তৈরি বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ও খেলনা, বিভিন্ন রকম ফলফলাদি ও মিষ্টি ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং বায়োস্কোপ, সার্কাস, পুতুলনাচ, ঘুড়ি ওড়ানো ইত্যাদি চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা থাকে। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ইত্যাদি অঞ্চলে এই মেলা বসে। অঞ্চলভেদে ৩-৪ দিন ধরে এই মেলা চলে।

সোনালীনিউজ/আমা

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!