• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে তোলপাড়!


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১২, ২০১৮, ০৬:১১ পিএম
ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে তোলপাড়!

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপাধি দেশরত্ম। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা তাকে এ নামেই ডেকে থাকেন। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী ডেকে থাকেন। 

অথচ এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খালেদা জিয়ার ‘দেশনেত্রী’ উপাধিতে সম্বোধন করলেন ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন!

শুধু ছাত্রলীগ সভাপতিই নয়, আরেক কাণ্ড ঘটিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও। ঘাতকের গুলিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিহত হওয়ার দিনটিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বিশাল সমাবেশে সমগ্র জাতির জন্য শোকের দিন ১৫ই আগস্টকে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন’ বলা নিয়েও দেখা গেছে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের একদিন পর গত ১ আগস্ট টিএসসি মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সমাজকল্যাণ পরিষদ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শেষে বের হওয়ার সময় টিএসসি প্রাঙ্গণে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। 

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দেশনেত্রী’ বলে সম্বোধন করেন। বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, এতদিন তো দেশনেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই চালাইছেন। এখন একটা আমাদের ক্রিটিক্যাল মোমেন্ট। এই মুহূর্তে নেত্রী একাই অনেক কিছু করতে পারবে না।’

এদিকে বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সন্ত্রাস বিরোধী এক সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এই ১৫ আগস্টে আমাদের আদর্শিক নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায়, যে কোন স্থানে যদি খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন করে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকবে আপনারা প্রতিহত করবেন।’

ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের এমন বক্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক অন্তত পাঁচ নেতার সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের থেকে এ ধরনের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত। তাদেরকে কথা বলায় আরো সংযত হতে হবে। নইলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাদের এ ধরনের কথাবার্তায় বিভ্রান্ত হবে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হবে। 

তারা আরো বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। ফলে সংগঠনে অনুপ্রবেশ ঠেকানো এই কমিটির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সেখানে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে এমন বক্তব্য অনুপ্রবেশকারীদের রুখে দেওয়ার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তারা রিসিভ করেন নি।

গত ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ৪ জুলাই ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদেরকে গণভবনে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। 

পরে যাচাই-বাছাই শেষে সম্মেলনের আড়াই মাস পর গত ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/জেএ

Wordbridge School
Link copied!