• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তুরস্কের ‘পাহাড়সম ক্ষমতা’ এখন এরদোয়ানের হাতে!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ১৭, ২০১৭, ১১:০৬ এএম
তুরস্কের ‘পাহাড়সম ক্ষমতা’ এখন এরদোয়ানের হাতে!

ঢাকা: প্রেসিডেন্ট শাসিত শাসন ব্যবস্থার পক্ষেই রায় দিলো তুরস্কের জনগণ। এর ফলে দেশটির ‘সর্বময় ক্ষমতা’ এখন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের হাতে। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে প্রেসিডেন্ট শাসিত ব্যবস্থা চালুর জন্য রোববার (১৬ মার্চ) দেশটিতে গণভোট দেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা দেশটির এই প্রেসিডেন্ট।

দেশটির রাষ্ট্রিয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে জানানো হয় সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে আর্থাৎ ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর পরিবর্তনের বিপক্ষে আর্থাৎ ‘না’ ভোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।

অপরদিকে এদিকে প্রবাসী তুর্কিরাও সংবিধান পরিবর্তনের দিকেই ভোট দিয়েছেন। ফলে সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়েছে এরদোয়ানের ‘হ্যাঁ’ ভোট। 

ফলে সাংবিধানিক সংস্কারে এরদোয়ানের সামনে আর কোন বাধা থাকল না। এই জয়ের ফলে তার আরো অন্তত এক যুগ ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত হল। বলা হচ্ছে নতুন যে সংবিধান আসতে যাচ্ছে, তাতে প্রেসিডেন্ট সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হবেন।

যেসব ক্ষমতা এখন এরদোয়ানের হাতে:
পার্লামেন্ট সদস্যদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে। জারি হবে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী শাসন কাঠামো। একজন প্রেসিডেন্ট ৫ বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ দুবার ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর। সেই হিসেবে গণভোটে জয়ী হওয়ায় আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে পারবেন এরদোয়ান।

বাতিল হবে প্রধানমন্ত্রীর পদ। এর বদলে এক বা একাধিক পছন্দের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিতে পারবেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। পাবেন সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রী নিয়োগ এবং বিচারিক কাজ চালানোর একচ্ছত্র ক্ষমতা।

প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে পার্লামেন্টের অনুমতি লাগবে না। নিজ ক্ষমতায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করতে পারবে না। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটে পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। এজন্য দুই-তৃতীয়াংশ পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন লাগবে।

গত জুলাইয়ের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরে নিজের অবস্থান জোরালো করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশব্যাপী আটক অভিযান চালিয়ে দমন করেছেন বিরোধীদের। সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছেন। এরদোয়ানের সমালোচকরা বলছেন। তিনি দেশটিতে স্বৈরশাসন পরিচালনা করতেই এই ভোটের আয়োজন করেন।

দেশজুড়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোট কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি তুর্কি নাগরিক নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন। তারা এরদোয়ানের পক্ষেই অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট শাসিত শাসন ব্যবস্থার এদিকেই রায় দিয়েছেন। এদিকে গণভোটে জয়ী হওয়ায় বেশকিছু সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের নেতারাও এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, গত ১৫ বছরে এরদোয়ান দেশটিকে গর্ত থেকে উঠিয়েছেন। এই রায়ের ফলে তুরস্ক আরো আধুনিকতার দিকে এগিয়ে গেল।

এরদোয়ানের সমর্থকেরা বলছেন, পার্লামেন্টারি ব্যবস্থার পরিবর্তে নির্বাহী প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থার প্রচল তুরস্ককে আধুনিক করবে।তবে বিরোধীরা জানিয়েছে, তারা গণভোটের এই ফলাফল চ্যালেঞ্জ করবে। তবে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সবাইকে জনগণের রায় মেনে নেবার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!