• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বছরেও ধরা পড়েনি কোনো আসামি


কুমিল্লা প্রতিনিধি মার্চ ২০, ২০১৮, ১২:৩৪ পিএম
দুই বছরেও ধরা পড়েনি কোনো আসামি

কুমিল্লা : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে মঙ্গলবার (২০ মার্চ)। দীর্ঘ দুই বছরেও হত্যাকারীরা শনাক্ত হয়নি। মামলারও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। হত্যাকারী চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা।

তনুর পরিবার জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেনি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় কুমিল্লার সিআইডি।

হত্যার শিকার তনুর মরদেহ দুই দফা ময়নাতদন্তের পরও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ প্রতিবেদন। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানায়। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কি না- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না।

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এই তিন ব্যক্তি তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরনো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মায়মুনা আক্তার রুবী বলেন, একটি প্রাণোচ্ছল মেয়েকে হত্যা করা হলো। দুই বছরেও কোনো আসামি শনাক্ত করা যায়নি। ভাবা যায় আমরা কোন সমাজে বসবাস করছি!

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান জানান, একটি সুরক্ষিত স্থানে তনু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দুই বছরেও অপরাধীদের শনাক্তে সিআইডির ব্যর্থতাই প্রমাণ করে সাধারণ মানুষ কত অসহায়। সিআইডির গা-ছাড়া ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকারী কে জানা যাবে। কারণ সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় টিউশনি করতে যাওয়ার পর জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি জানান, মেয়ের শোকে তনুর বাবা অসুস্থ, হাঁটতে পারছেন না। তিনি বর্তমানে তিন মাসের ছুটিতে আছেন। তনুর জন্য আজ মঙ্গলবার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের দুইটি মসজিদে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলার স্বার্থে পুনরায় আরো অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা মিশনে ছিলেন, তারা আসছেন। দু-তিন মাসের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!