• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘দুদেশের অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে কী করেছেন প্রধানমন্ত্রী’


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৫, ২০১৮, ১০:৫৪ পিএম
‘দুদেশের অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে কী করেছেন প্রধানমন্ত্রী’

ফাইল ফটো

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতে গিয়ে তিস্তার পানি বণ্টনসহ দুই দেশের অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে কী করেছেন তিনি (প্রধানমন্ত্রী)’, তা জানতে চেয়েছে বিএনপি।’

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গে গেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি নিকেতনে বাংলাদেশ ভবন নির্মাণ করেছে- অত্যন্ত ভালো কথা। সেই সঙ্গে আমাদের প্রশ্ন, জনগণের প্রশ্ন, আমাদের যে পাওনাগুলো রয়েছে, সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে তিনি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলছেন কি না।

শুক্রবার (২৫ মে) রাজধানীর গুলশানের ইমান্যুয়েলস কনভেশন সেন্টারে ইফতার মাহফিলে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) রাজনীতিবিদদের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল তখনই তারা বলেছিল আমরা তিস্তা নদী পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারব। এটা তো মাত্র সময়ের ব্যাপার। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তিস্তা নদীর এক ফোঁটা পানির ব্যাপারেও কোনো চুক্তি হয়নি।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শুধু তিস্তা নয়, অভিন্ন যে ১৫৮টি নদী রয়েছে সেই নদীগুলোর হিস্যার ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। অথচ দেখা যাচ্ছে যে, সামরিক চুক্তি হচ্ছে। সীমান্তে যে মানুষদের হত্যা করা হয় সেটাকে বাদ দিয়ে ট্রানজিট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন বন্দর নির্মিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন , বিএনপি অবশ্যই কানেকটিভিটির পক্ষে, আমরা চাই একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সংযোগ স্থাপন হোক। একই সঙ্গে সেই সংযোগের বিনিময়ে  আমরা কী পাচ্ছি সেটাও জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এভাবে জনগণকে বোকা বানিয়ে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রচারণায় এমপিরা অংশ নিতে পারবে বলে নির্বাচন কমিশন যে সংশোধন এনেছে তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছে। তারা সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের প্রচারণায় নামার জন্য অনুমোদন দিয়ে কাজ করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ইসির এই পদক্ষেপ নিসন্দেহে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি এমপিদের প্রচারণায় নামতে দেয়া হয় তাহলে সেখানে কিছুতেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। এ কারণে অঅমরা এর বিরোধীতা করেছি। আমরা মনে করি যে, এটা এখনো আইন হয়নি। এটা থেকে তারা (ইসি) রিবত থাকবেন এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তারা তৈরি করবেন।’

চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকবছর ধরে সরকার বিভিন্ন অভিযানের নামে দেশের নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে। এখন আবার নতুন যে অভিযান শুরু করেছেন হঠাৎ করেই রোজার মাসে, নির্বাচনের বছরে, আপনারা মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। আগে নিজের ঘরটা পরিষ্কার করুন। আপনার ঘরের মধ্যে কতজন আছেন, যারা মাদকের ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত তাদের আগে নিয়ে আসুন।’

খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সরকার একতরফা নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কাজেই তাকে বাদ দিয়ে কখনো কোনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। যারা বিএনপি ও ২০ দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের চিন্তা করছেন তারা অলীক চিন্তা করছেন। আরেকবার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না দেশের মানুষ।’

জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।

ইফতার মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরো অংশ নেয়, ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, আবদুল হালিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, বিজেপির আবদুল মতিন সাউদ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা শেখ গোলাম আজগর, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মো. ফরিদউদ্দিন, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির দুই অংশের হামদুল্লাহ আল মেহেদি, মাহমুদ খান, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, মো. শহীদন্নবী ডাবলু, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।

এ ছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএমএম আলম, আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, আনোয়ারা বেগম, মাওলানা রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীমসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!