• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিবন্ধন রক্ষায় নির্বাচনে অংশ নিতে হবে বিএনপিকে


এম সুজন আকন মার্চ ৩, ২০১৭, ০৪:৩৩ পিএম
নিবন্ধন রক্ষায় নির্বাচনে অংশ নিতে হবে বিএনপিকে

ঢাকা: দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিলেও নিবন্ধন রক্ষায় বিএনপিতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে। তা না হলে আইন অনুযায়ী তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরপর দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে সেসব দলের নিবন্ধন বাতিলের কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি নতুন আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হলেও সে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিবন্ধন রক্ষার কোন সুযোগ নেই।

বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ ২৮ রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ মোট ১২ রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ফলে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়া বিএনপিসহ ইসির নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত দুই ডজন রাজনৈতিক দল। আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে এসব দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। এসব দলের আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই তাদের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য শেষ সুযোগ। এ নির্বাচনে অংশ না নিলে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন ভিন্ন জিনিস। আরপিওতে বলা হয়েছে, পরপর দুবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে সে দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। এর সঙ্গে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশ নেয়া বা না নেয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার পর ইতোমধ্যে পরপর দুটি সাধারণ নির্বাচন হয়ে গেছে। সামনেই আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে নিবন্ধন বাতিলের হিসাব-নিকাশও শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে গোলযোগ-সহিংসতার দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ও শরিক জোটদের ভোট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই সব দলকে আগামী নির্বাচনে আনার কথাও বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।

এদিকে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। শুক্রবার (৩ মার্চ) জাতীয়তাবাদী মৎসজীবী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।  

এ সময় তিনি নির্দলীয় সরকার বা সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মৎসজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব, সাধারণ সম্পাদক মিলন মেহেদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে নিবন্ধন বাতিলের সুযোগ থাকায় বিএনপি অবশ্যই আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, নিবন্ধন বাঁচানোর জন্য বিএনপি অবশ্যই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না, দলটির নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সময় এবং স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তেমনি সংবিধান ও নির্বাচন কারোর জন্য অপেক্ষা করবে না। এবারও যদি কেউ না আসে; তবে না আসার কোনো কারণ নেই।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ আছে কি না—সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ আছে কি না, এটা হলো আমার প্রথম প্রশ্ন। সংবিধানে না থাকলে এই সুযোগ আমি কীভাবে দেব।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আফজল খান এবং আ ক ম বাহারউদ্দিনের দ্বন্দ্বের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের দ্বন্দ্বটা কি কুমিল্লার চেয়ে তীব্র ছিল? তো, এটা আমরা মিটিয়ে ফেলেছি না? নির্বাচনের দিন একযোগে কাজ করে বিজয় ছিনিয়ে আনেনি? নারায়ণগঞ্জে যেটা সম্ভব হয়েছে, কুমিল্লাতেও সেটা সম্ভব। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেখানে লড়ব।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোন্দলের বিষয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মতো কুমিল্লার দ্বন্দ্বও আমরা সমাধান করব।


সোনালীনিউজ/এমটিআই/আকন

Wordbridge School
Link copied!