• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুরুষরা কোন ধরনের নারীদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট?


লাইফস্টাইল ডেস্ক সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৬, ০৬:৩৫ পিএম
পুরুষরা কোন ধরনের নারীদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট?

সম্প্রতি ইউরোপীয়ান জার্নাল অফ স্যোশাল সাইকলজি একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে ৬২টি দম্পতির ওপর ৮ মাস ধরে গবেষণা চালায়। এতে গবেষকরা মূলত যৌনতা এবং ঘনিষ্ঠতার আকাঙ্খা কী করে সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে কারো সম্পর্ককে প্রভাবিত করে তা খতিয়ে দেখতে চেয়েছেন। গবেষণার প্রধান একটি উপসংহার ছিল, পুরুষরা তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করেন যদি তাদের সঙ্গীনি একটু বেশি ‘মেয়েলি’ উপায়ে আচরণ করেন।

সনাতন পদ্ধতি
চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী তনুশ্রী ভারগাভা বলেন, ‘যে পুরুষরা চান যে তাদের সঙ্গীনি একটু বেশি মেয়েলি উপায়ে আচরণ করুক তারা হয়তো সনাতন পদ্ধতির পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। এ ধরনের পুরুষরা অনুভব করেন, এমন কিছু পূর্বনির্ধারিত ভূমিকা রয়েছে যেগুলো নারীদেরকে অবশ্যই পালন করতে হবে। তারা এও বিশ্বাস করেন, যে নারীরা এই পূর্বিনির্ধারিত কাঠামোতে পড়েনা তারা তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

জেনি ডি কস্তা নামের ২৮ বছর বয়সী এক নার্সও তার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে এই একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। জেনির উদার আচরণের সঙ্গে তার ছেলে বন্ধু প্রায়ই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারতেন না।

জেনি বলেন, ‘আমি সবসময়ই আমার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে সবকিছু নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতাম। আমরা যখন ডেটিংয়ে যেতাম তখন যদি আমি তার চেয়েও দেখতে সুদর্শন কোনো পুরুষকে দেখতাম তাও আমি তাকে বলতাম। এতে প্রায়ই আমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে কীভাবে বসতে হবে তা নিয়েও খবরদারি করত। যেনবা আমি তখন পোশাক পরছিলাম।’
কিন্তু পরিস্থিতি আরো মারাত্মক রূপ ধারণ করে যখন জেনির বয়ফ্রেন্ডের এই অনুভুতি হতে থাকে যে, জেনির এই উদার স্বভাবের কারণেই জেনি তার সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে। ফলে সে একজন প্রাইভেট গোয়েন্দা ভাড়া করল জেনির ওপর নজরদারি করার জন্য।

জেনি জানান, ‘কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে আমার বয়ফ্রেন্ড আমার পেছনে গোয়েন্দা লাগানোর বিষয়টি স্বীকার করে। এবং আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। কারণ সে জানত যে আমি তার সঙ্গে কোনো মিথ্যা কথা বলছিলাম না।’

নিরাপত্তাহীনতার ইস্যু
পুরুষরা বিশেষ করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যখন তাদের সঙ্গীনি যৌনতায় আগ্রাসী হন। সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শ্যাম মিথিয়া বলেন, এই ধরনের পুরুষরা তাদের সঙ্গীনিকে অনুগত স্বভাবে অধিকারী হিসেবে প্রত্যাশা করেন। আর এমনটা না হলে তারা হুমকি বোধ করেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

দাম্পত্য সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ভিষ্ণু মোদি বলেন, কোনো নারী যদি প্রায়ই যৌনতায় আগ্রাসী আচরণ করেন তাহলে পুরুষরা তা নেতিবাচকভাবেই দেখেন। এতে নারীটির কোনো অপরাধ ছাড়াই দাম্পত্য সম্পর্কে কলহ দেখা দেয়।

এমনটাই ঘটেছে নিরঞ্জন শাহ এর সঙ্গে। যিনি পেশায় একজন স্টকব্রোকার। ৩২ বছর বয়সী এই পুরুষ বিয়ের পর যখন তার স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হতে যান তখন তিনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হন যার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। নিরঞ্জন বলেন, ‘আমি সবসময়ই শুনে এসেছি নারীরা তাদের বিয়ের রাতে একটু লাজুক হয়ে থাকে। কিন্তু আমার স্ত্রীর বেলায় এর উল্টোটা ঘটেছে। দৈহিক মিলনের ক্ষেত্রে তিনিই সব সময় প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করতেন। এ কারণে শাহ পরে সবসময়ই তার স্ত্রীকে যৌনতায় সন্তুষ্ট করার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতেন।

শাহ বলেন, ‘এতে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। কয়েকমাস ধরে যন্ত্রণায় ভোগার পর অবশেষে আমার ভয়ের ব্যাপারে স্ত্রীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলি। তিনি আমাকে এই বলে আশ্বস্ত করেন আমার সঙ্গে দৈহিক মিলনে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট।’

তনুশ্রী ভারগাভা বলেন, যেসব পুরুষদের মধ্যে এই ধরনের উদ্বেগ কাজ করে তাদের উচিৎ এই ধরনের চিন্তাগুলো নিয়ে ভালো করে ও সময় নিয়ে ভাবা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় হয়তো পরিস্থিতির কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। সঙ্গীনিকে বদলানোর চেষ্টা না করে বরং এসব পুরুষদের উচিৎ এই বিষয়টি উপলব্ধি করা যে, তারা তাদের সঙ্গীনির সাথে অন্য আরো অনেক কারণে সম্পর্ক গড়েছেন। তার চেয়ে বরং নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টাই উত্তম কাজ হবে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!