• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিতর্কিত ও অনভিজ্ঞদের নিয়ে ট্রাম্পের মন্ত্রীসভা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ২৬, ২০১৭, ০৮:২৩ পিএম
বিতর্কিত ও অনভিজ্ঞদের নিয়ে ট্রাম্পের মন্ত্রীসভা

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্টের মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে কিছু সমালোচনা হয়েই থাকে। কিন্তু এবারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিতর্কিত ও অনভিজ্ঞাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করার প্রস্তাবকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইতিহাসের সর্বনিকৃষ্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ওয়াশিংটর পোস্ট।

ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট।

ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্যই ধনকুবের ব্যবসায়ী বা সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল। তাদের নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তাদের অজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতা নিয়ে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন দফতরের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সঙ্গে ট্রাম্প মনোনীত মন্ত্রীর অবস্থানের বৈপরীত্য লক্ষণীয়।

জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে রিক পেরিকে বাছাই করেছেন ট্রাম্প। অথচ একসময় তিনি এই দফতর তুলে দেয়ার কথা বলেছিলেন। অন্যদিকে ওবামা প্রশাসনের জ্বালানিমন্ত্রী আর্নেস্ট মোনিজ একজন শ্রদ্ধাভাজন পরমাণু পদার্থবিদ। বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার যথেষ্ট জ্ঞান নিয়েই এই মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।

ট্রাম্প তার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে টম প্রাইসের নাম ঘোষণা করেছেন। তিনি একজন চিকিৎসক। তারও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। গত বছর চিকিৎসাসামগ্রী প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানির শেয়ার কেনেন। পরে কোম্পানির জন্য লাভজনক একটি আইন কংগ্রেসে প্রস্তাব করেন রিপাবলিকান পার্টির এই কংগ্রেসম্যান। সম্প্রতি বিদেশি একটি ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ট্রাম্পের পছন্দ বেটসি ডেভসকে। রিপাবলিকান পার্টির এই শত কোটিপতি দাতা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। পদ নিশ্চিতের শুনানিতে শিক্ষানীতির মৌলিক বিষয়ে চরম অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে বিরুদ্ধে মনোভাব পোষণের জন্য অ্যান্ড্র– পুজডার আলোচিত। আর তাকেই শ্রমমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করেছেন ট্রাম্প। একটি ফাস্ট ফুড কোম্পানির এই সিইও শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর বিরোধী। শুধু তা-ই নয়, তার কোম্পানির বিরুদ্ধে কর্মচারী ঠকানোর অভিযোগ রয়েছে।

রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছিলেন বেন কারসন। তাকে গৃহায়ণ ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করেছেন ট্রাম্প। দুঃখজনক হলেও সত্য, গৃহায়ণনীতি বিষয়ে কারসনের ন্যূনতম ধারণা নেই। যে কয়জন আফ্রিকান-আমেরিকানকে ট্রাম্প চেনেন, বেন কারসন তাদের অন্যতম। কারসন নিয়োগ পাওয়ার পেছনে দৃশ্যত এটাও একটি কারণ।

ট্রাম্প তার বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে উইলবার রসকে মনোনীত করেছেন। তিনি একজন কোটিপতি বিনিয়োগকারী। তার বাড়িতে কাজ করা বেশ কিছু কর্মচারীকে তিনি কোনো কাগজপত্রই দেননি বলে সম্প্রতি তথ্য বেরিয়েছে।

ব্রায়ান জিংকিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান জিংকি নেভি সিলের সাবেক সদস্য। চাকরিজীবনে আর্থিক অনিয়ম করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলেন তিনি।

ট্রাম্প মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন একজন তেল ব্যবসায়ী। সরকারি দায়িত্ব বা ক‚টনৈতিক বিষয়ে তার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে তেলসমৃদ্ধ বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তার।

ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল জেমস ম্যাটিস। তিনি ‘ম্যাড ডগ’ হিসেবে পরিচিত। যুদ্ধপ্রীতির জন্য তিনি ‘যুদ্ধবাজ সন্ন্যাসী’ হিসেবে দুর্নাম কুড়িয়েছেন।

ট্রাম্প তার প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের ‘ইতিহাসের সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই মন্ত্রিসভা নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে অনভিজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছেন ব্যুকিংস ইনস্টিটিউশনের অন্যতম ফেলো নরমান এলসন।

আন্তর্জাতিক/আতা

Wordbridge School
Link copied!