• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতির মাঠ গোছাতে ঈদে নির্বাচনী এলাকায় জাপা প্রার্থীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৭, ২০১৭, ০৯:৩৪ এএম
রাজনীতির মাঠ গোছাতে ঈদে নির্বাচনী এলাকায় জাপা প্রার্থীরা

ঢাকা : ঈদ আসে ঈদ যায়। কিন্তু এবারের ঈদ হবে একটু ভিন্ন আমেজের। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঢেউ লাগায় এবার ঈদ অনেকটা রূপ নিয়েছে নির্বাচনী উৎসবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির বর্তমান ও সাবেক এমপি-মন্ত্রীরা ছুটছেন নিজ নিজ এলাকায়। শুধু এমপি-মন্ত্রীরাই নন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগই এবার ঈদ উদযাপন করছেন গ্রামে। তাদের পদচারণায় বেশ জমে উঠেছে ঈদ রাজনীতি।

গত শুক্রবার জুমাতুল বিদা আদায়ের পর কোলাকুলির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদে ভোটের রাজনীতি শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। চলবে ঈদের পর আরও দুই-তিন দিন। এ সময়ে ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটিই করবেন না তারা।

এবার ঈদে রাজনীতির মাঠ গোছাতে দলের সংসদ সদস্যসহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ঢাকায় বসে না থেকে যার যার নির্বাচনী এলাকায় ছুটে যেতে এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে মনোযোগী হতে বলেছেন তিনি।

জানা গেছে, পার্টি চেয়ারম্যানের নির্দেশনা পেয়ে দলের অধিকাংশ সংসদ সদস্য যার যার নির্বাচনী এলাকায় ছুটেছেন। সংসদ সদস্য নন, কিন্তু আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির টিকিটে নির্বাচন করতে চান, এমন সম্ভাব্য প্রার্থীরা অনেক আগেই ছুটে গেছেন এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ করতে।

পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতিমধ্যে তার নির্বাচনী এলাকা রংপুর থেকে ঘুরে এসেছেন। দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ময়মনসিংহে এবং আরেক কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের রংপুরে ঈদ করবেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু চট্টগ্রামে ঈদ করবেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ওমরা থেকে ফিরে ছুটে যাবেন নির্বাচনী এলাকায়।

জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত ঢাকার তিনটি আসনের সংসদ সদস্যের মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম নিজ নির্বাচনী এলাকা নবাবগঞ্জ ও দোহারে ঈদ করবেন। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এবং সম্ভাব্য প্রার্থী মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন ঢাকায় ঈদ করবেন।

গত বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশন মুলতবি হওয়ার পরপরই নিজ নিজ এলাকার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম উমর, ইয়াহিয়া চৌধুরী, এমএ নোমান, পীর ফজলুর রহমান, শওকত চৌধুরী, মশিউর রহমান রাঙ্গা, একেএম মাইদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, নূর ই হাসনা চৌধুরী লিলি, নাসরিন জাহান রত্না, মাহজাবিন মোর্শেদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সেলিম ওসমান, সেলিম উদ্দিন, আমির হোসেন, নুরুল ইসলাম মিলন, মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রমুখ।

জানতে চাইলে দলের সাবেক মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘পার্টি চেয়ারম্যান সবাইকে এলাকায় গিয়ে এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।’

বিভিন্ন ব্যুরো অফিসে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, সারা দেশেই বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পদচারণায় মুখরিত। উত্তরাঞ্চলের সবক’টি আসনেই এখন ঈদ রাজনীতিতে মুখর। মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের পদচারণায় ব্যস্ত তারা। বগুড়ায় ঈদ সামনে রেখে সাত আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা মাঠে। তাদের সঙ্গে বসন্তের কোকিলখ্যাত অনেকেই এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন। কুমিল্লায় ১১টি নির্বাচনী আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইফতার পার্টি, জাকাত, ফিতরা, ঈদ বকশিশ, পাঞ্জাবি, শাড়ি, লুঙ্গি বিতরণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত আছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন। ঈদকে ঘিরে ময়মনসিংহের ১১টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সরব।

দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী এলাকায় এলেও এর সম্পূর্ণ উল্টোচিত্র বিএনপি নেতাদের ক্ষেত্রে। আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের আশায় বিএনপির যেসব নেতারা বছরজুড়ে লবিং-তদবির করছেন তাদেরও এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না এলাকায়। পরিস্থিতি এমন যে, এলাকায় আসা তো দূরের কথা, মাঠের কর্মীদের ঈদ আবদার পূরণের ভয়ে মোবাইল ফোন পর্যন্ত বন্ধ করে রেখেছেন বিএনপির অনেক নেতা। অবশ্য এক্ষেত্রে তাদেরও রয়েছে ভিন্ন ব্যাখ্যা। চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি সংসদসীয় আসনে বর্তমান এমপি-মন্ত্রী এবং বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকে এবার নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী ঈদ কাটাবেন। এরই মধ্যে তারা ইফতার সামগ্রী বিতরণের মধ্য দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছেন। নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় কেউ কেউ অকাতরে বিলাচ্ছেন ‘ঈদ উপহার’। দলীয় নেতাকর্মী, অনুসারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে তালিকা করে গরিব ও অসহায়দের মধ্যে শাড়ি-লুঙ্গি, পাঞ্জাবিসহ ঈদবস্ত্র বিতরণ করেছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!