• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আপত্তি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম আসছে!


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২২, ২০১৮, ০২:০৪ পিএম
সংসদ নির্বাচনে ইভিএম আসছে!

ঢাকা : রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোর আপত্তির মুখে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিশ্চিতের উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম সফল হলে আগামী সংসদ নির্বাচনেও এই যন্ত্রের ব্যবহার করবে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইভিএমের কারিগরি কমিটি বলছে, সুরক্ষিত করে তৈরি হচ্ছে নতুন ইভিএম। এতে যুক্ত হচ্ছে ১০ রকম প্রযুক্তি সুবিধা। সেগুলো হচ্ছে- ভোটগ্রহণের আগে মেশিন চালু না হওয়া ও মেশিন ছিনতাই হলেও অবৈধ ভোটদান বন্ধ, পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত থাকায় অনুমোদিত ব্যক্তির বাইরে অন্য কেউ মেশিন চালু করতে পারবে না। ভোট শুরুর আগে-পরে শূন্য ভোটিং ও প্রিন্টিং করার সুবিধা। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফল প্রিন্ট, ঘোষণা ও বিতরণ করার ব্যবস্থাও থাকছে।

ইসির সঙ্গে সংলাপে অধিকাংশ দল ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে। তারা স্থানীয় সরকার বা জাতীয় যেকোনো নির্বাচনেই ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে। এসব মতামত উপেক্ষা করে দ্রুত ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় আড়াই হাজার ইভিএম কিনলেও পরে আরো ৫ থেকে ১০ হাজার ইভিএম কেনার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। কর্মকর্তারা জানান, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন সংগ্রহের লক্ষ্যে দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে ইভিএমের চাহিদা, ক্রয়  ও সংগ্রহের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।

ইভিএম ব্যবহার উপযোগী করার লক্ষ্যে ভোটার শনাক্তকরণ এবং ভোটিং মেশিন দুটি একত্রিত করে একটি মেশিনে রূপান্তরিত করা, ব্যালট ইউনিট কনসিল বোতাম বাদ দেওয়া, ব্যালট ইউনিটের ভোট প্রদানের বোতামগুলো বড় আকারের ও ভিন্ন রঙের করা এবং বোতামের আকার একটু বড় করা, ইভিএমের কাঠামো, টাচ স্ক্রিন, কি-বোর্ড ও ভোটদান বোতামগুলোর মান উন্নত করা এবং ভোটার ভেরিফিকেশন মেশিনের সঙ্গে যুক্ত প্রজেক্টরটি মেশিনের মধ্যে সংযুক্ত করা।

এ ছাড়া কিউআর কোড মুদ্রণ বাদ দিয়ে একটি মেশিনের মাধ্যমে ভোটার শনাক্ত করা, ইভিএমের পুরো প্রটোকল, বিজনেস প্রসেস, সোর্স কোড ইত্যাদির ওপর রাইটআপ প্রস্তুত করা, ইসির সার্বিক তত্ত্বাবধানে সংরক্ষণ করা এবং ইভিএম নিরাপদে ব্যবহারের জন্য মেশিন অনুযায়ী ও সুরক্ষা বক্স ব্যবহার করার সুবিধা থাকবে নতুন মেশিনে।

ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা নতুন ইভিএম তৈরি করছি। আগামী পাঁচ সিটি করপোরেশনে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হবে। সফল হলে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।’

২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়ে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম চালু করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহায়তায় প্রথমে ২০১০ সালে ৫৩০টি ইভিএম মেশিন কেনা হয়। নির্বাচনে ব্যবহার করতে গিয়ে দেশের প্রধান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ইভিএমে নানা যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে ২০১১ সালে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) তৈরি ৭০০ ইভিএমও পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত হয়নি।

হুদা কমিশন ২০১১ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বুয়েটের ইভিএম ব্যবহার করে। পরে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, টাঙ্গাইল ও নরসিংদী পৌরসভায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার হয়।

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রকিব উদ্দীন কমিশন দায়িত্ব নেয়। তাদের মেয়াদে রাজশাহী সিটিতে ২০১৩ সালে ইভিএম ব্যবহার বিতর্কের ঝড় তোলে। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুনর্গঠিত  কেএম নুরুল হুদা কমিশন দায়িত্বে এসে কমিটি করে পুরনো ইভিএমকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। নতুন প্রবর্তিত ইভিএম রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৪১ নম্বর কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে ব্যবহার করে। তাও পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত ছিল না। পুরনো ইভিএমের মতো ত্রুটি নিয়ে নির্বাচন শেষ করতে হয়। পরবর্তী সময়ে সুরক্ষিত ইভিএম তৈরিতে যত ধরনের সম্ভাব্য উপায় রয়েছে তা খতিয়ে দেখে মাঠে নামে ইভিএমের কারিগরি দল।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!