• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৬ দাবি রেখে আন্দোলন স্থগিত


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১২, ২০১৮, ১২:৫৩ পিএম
৬ দাবি রেখে আন্দোলন স্থগিত

ফাইল ছবি

ঢাকা: ছয়টি দাবি রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কোটা সংস্কারের’ আশ্বাসে প্রজ্ঞাপন জারি পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছেন চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। 

গত কয়েক দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে যেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছিলেন আন্দোলনকারীরা, সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরের আগে আন্দোলন স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ সমাজের প্রাণের দাবি মেনে নিয়েছেন। আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রজ্ঞাপন জারি করা পর্যন্ত স্থগিত করলাম।

আন্দোলনকারীদের এ প্ল্যাটফর্মের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর লিখিত বক্তব্যে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো-

  • কোটা ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দ্রুত গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
  • গত কয়েক দিনের কর্মূসচির মধ্যে গ্রেপ্তার আন্দোলনকারীদের সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
  • পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ-ভাঙচুরের ঘটনায় যেসব মামলা করেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।
  • ‘পুলিশি নির্যাতনে’ আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করতে হবে।
  • আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের যাতে পরবর্তীতে কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ভিসির বাসায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

নুরুল হক নূর বলেন, কোনো রকম হয়রানি করা হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আবার আন্দোলন শুরু করা হবে। কোটা সংস্কারের দাবিতে এই আন্দোলনে ‘সহমত পোষণ করায়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ধন্যবাদ জানান আন্দোলনকারীরা।

আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর ছাড়াও পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান ও মো. ফারুক হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে আন্দোলনকারীরা আনন্দ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যায়। সেখান থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে তারা শ্রদ্ধা জানাবেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য তাদের ফুল নিয়ে যাওয়ারও কথা রয়েছে।

গত ৮ এপ্রিল থেকে কোটা সংস্কারের আন্দোলন বড় আকারে শুরু হয়। বুধবার (১১ এপ্রিল) শাহবাগ এবং ঢাকার অন্যত্র সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে সরব হয়। দেশের নানা জায়গায় সড়ক অবরোধ হয় এ দাবিতে। ঢাকায় আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দাবি করেন। 

সেদিনই দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের কোটা বাতিলের কথা বলেছেন। 

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্লাস বন্ধ। পড়াশোনা বন্ধ। এরপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য, আর বারবার এই আন্দোলনের ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলো বাতিল।’ 

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটাপদ্ধতিরই দরকার নেই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তাদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এই আন্দোলন যারা করেছে, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তারা ক্লাসে ফিরে যাক।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!