শেখ রাসেলের দ্বিতীয় না বসুন্ধরা কিংসের প্রথম?

ঢাকা: এ বছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র ছয় দিন। দেশের ঘরোয়া ফুটবলের মূল টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের একাদশ আসর এখনও মাঠেই গড়ায়নি। চলতি বছরে আর সেটি সম্ভবও না। পেশাদার ফুটবলাররা গা গরম করেছে ফেডারেশন কাপ দিয়ে। আর তারা বছর শেষ করতে যাচ্ছে স্বাধীনতা কাপ দিয়ে। ফেড কাপের ফাইনালে উঠেও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি নবাগত বসুন্ধরা কিংসের। স্বাধীনতা কাপে সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চায় অস্কার ব্রোজেনের শিষ্যরা। আর দ্বিতীয়বার এই টুর্নামেন্টে সেরা হওয়ার লক্ষ্য শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের।  

এমন লক্ষ্য সামনে রেখে বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এবং বসুন্ধরা কিংস। কথায় বলে শেষ ভাল যার, সব ভাল তার। ট্রফি ঘরে তুলে বছর শেষটা রাঙাতে অঙ্গীকার করেছে দুই দলের কোচ আর অধিনায়ক।  

মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল পুর্ব সংবাদ সম্মেলনে শেখ রাসেলের কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘শুরুটা খুবই কঠিন ছিল। গ্রুপ পর্বে ভাল খেলেনি ছেলেরা। তবে এখন আমরা  ফাইনালে খেলছি। পুরো কৃতিত্বটাই ফুটবলারদের। ফাইনালে ছেলেরা যদি তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের সেরাটা দিতে পারে তাহলে ম্যাচের ফল তাদের পক্ষেই যাবে।’

গ্রুপ পর্বে বসুন্ধরা কিংস ও শেখ জামালের সঙ্গে গোলশূণ্য ড্র করে মাত্র দু’পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে দলটি। চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় দলটি। আর ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে ব্রাদার্সকে হারায় একই ব্যবধানে। তাই শুরু থেকে ফাইনাল পর্যন্ত উঠে আসার কৃতিত্বটা ফুটবলারদেরই দিয়েছেন কোচ টিটু।

ফেডারেশন কাপে বসুন্ধরার কাছে হারের প্রতিশোধ নিতে চান কিনা এমন প্রশ্নে শেখ রাসেল কোচ বলেন, ‘প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই আমি। তবে শিরোপা জিততে চাই। যদিও প্রতিপক্ষের কলিন্দ্রেসের উপরেই আমাদের ফোকাসটা বেশি থাকবে। তাকে কোন সুযোগ দেয়া যাবে না।’

শেখ রাসেলের অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম রানা দারুন আত্মবিশ্বাসী শিরোপা জয়ের ব্যাপারে। তিনি বলেন, ‘ফাইনালে সেরা ফুটবল খেলে শিরোপা জয় করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তার দল। তবে ম্যাচে আগে যারা গোল করবে, তারাই এগিয়ে থাকবে ম্যাচে। সে জন্য আমরাই এগিয়ে থাকতে চাই।’

বসুন্ধরা কিংস নবাগত দল। সাম্প্রতিক মুখোমুখি লড়াইয়ে অভিজ্ঞ শেখ রাসেলের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে বসুন্ধরা। অনুশীলন ম্যাচ এবং ফেডারেশন কাপে দু’বার শেখ রাসেলকে হারিয়েছে তারা। তবে সর্বশেষ ম্যাচে শেখ রাসেলের সঙ্গে ড্র করেছে কিংস। সেটি ছিল স্বাধীনতা কাপের গ্রুপ পর্বে।  

সংবাদ সম্মেলনে বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রোজেন বলেন, ‘ট্রফি জিতেই ক্রিসমাস পালন করতে চাই। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে চাই।’

ফেডারেশন কাপের ফাইনালে খেলছে বসুন্ধরা। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা কাপের ফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে নবাগত দলটি। ফাইনালের আগে খানিকটা চাপ অনুভব করছে কিনা এমন প্রশ্নে বসুন্ধরা কিংসের কোচ বলেন, ‘আমি জানি শেখ রাসেল এখন অবদি গোল হজম করেনি। খুবই শক্তিশালী দল তারা। তার উপর আমাদের দলে কিছু ইনজুরি সমস্যা রয়েছে। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জর্জ গোতোর ব্লাস ইনজুরিতে রয়েছে। ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ নিষিদ্ধ। একটু চাপেতো থাকবোই। তারপরও দেখা যাক কি হয়।’

গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকুর প্রশংসা করে অস্কার ব্রোজেন বলেন, ‘দু’টি ম্যাচ আমাদেরকে জিতিয়েছে সে। অসাধারণ খেলছে। ফাইনালে সেভাবে খেলতে পারলে আশা করি আমরা শিরোপা জিততে পারবো।’

বসুন্ধরা কিংসের অধিনায়ক ইমন বাবু বলেন, ‘আমরা মন জয় করে খেলতে চাই। কোচ টিটু’র অধীনে খেলার অতীত অভিজ্ঞতার কারণে তার কৌশলের অনেক কিছুই জানা আছে আমাদের। দেখা যাক ম্যাচে কি হয়।’ তবে বসুন্ধরার তুরুপের তাস কোস্টারিকার হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কলিন্দ্রেস।

টুর্নামেন্টের প্রথম সেমি ফাইনালে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে শেখ রাসেল। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আবাহনী লিমিটেডের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে সাডেন ডেথে ৭-৬ গোলে হারিয়ে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বসুন্ধরা কিংস।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই