ঘুমধুম সীমান্তে ফের গোলাগুলি, আতঙ্কে বাসিন্দারা

  • প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ১১:২৯ এএম

ঢাকা: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ওপার থেকে ফের গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।

ঘুমধুম হলেও এই এলাকা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পাশের সীমান্তবর্তী অংশে অবস্থিত। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হেলাল জানিয়েছেন, “রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে স্থানীয়রা গোলাগুলির শব্দ শোনেন। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।”

স্থানীয় তুমব্রু বাজারের বাসিন্দা মোস্তাকিম আজিজ বলেন, “হঠাৎ মুহূর্তে গুলির শব্দ শোনা শুরু হয়। রাত ২টার দিকে বিকট শব্দ শোনার পর মনে হয়েছে, এটি মর্টার শেলের শব্দ হতে পারে।”

[254953]

সীমান্তবর্তী এই এলাকায় গোলাগুলির উৎস হিসেবে স্থানীয়রা উল্লেখ করেন রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দুটি ক্যাম্প—‘রাইট’ ও ‘লেফট’। জানা গেছে, এই ক্যাম্পগুলো ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় জান্তার কাছ থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল আরাকান আর্মি। ক্যাম্পগুলোর মাঝামাঝি নারিকেল বাগিচায় গত ১০ অগাস্টও গোলাগুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল।

তুমব্রু বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফি বলেন, “প্রায় ১০ দিনের ব্যবধানে একই জায়গায় আবার গোলাগুলি হচ্ছে। এক সময়ে আমরা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছি। পরিবার নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়েছে।”

এই সীমান্ত এলাকা ৩৪ বিজিবির আওতাধীন। কিন্তু এই ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে ১০ অগাস্টের ঘটনার পর লেফট্যানেন্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম বলেন, “শুন্য রেখার প্রায় ৩০০ মিটার দূরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটলেও বাংলাদেশের অংশে কোনো প্রভাব পড়েনি। সম্ভবত আরাকান আর্মি এবং অন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরসা বা আরএসওর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা হয়েছে।”

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আরাকান আর্মি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার নিজেদের নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছিল। এরপর থেকে এই অঞ্চলে তাদের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। স্থানীয়দের উদ্বেগ, সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এলাকার মানুষদের জন্য নিরাপত্তা ও জীবিকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

ওএফ