মাওলানা মুহিবুল্লাহকে দুই পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় মিলল, নেপথ্যে কী

  • জেলা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

গাজীপুরের টঙ্গী থেকে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে টঙ্গীর বিটিসিএল টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম মো. মুহিবুল্লাহ মিয়াজীকে (৬৫)। উদ্ধারের সময় তার দুই পা শিকল দিয়ে একটি কলাগাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিতাগ্রাম হেলিপ্যাড এলাকার মহাসড়কের পাশে তাকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্থানীয় বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের ইমাম শিহাব উদ্দিন প্রথমে মুহিবুল্লাহকে দেখতে পান। তিনি জানান, ‘ভোরে নামাজ শেষে দেখি একজন কলাগাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছেন। কাছে গিয়ে চিনতে পারি না। পরে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে পড়লে জানা যায়, উনি টঙ্গীর ইমাম মুহিবুল্লাহ মিয়াজী।’

ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুহিবুল্লাহ মিয়াজী সাংবাদিকদের বলেন,

‘বুধবার সকালে বাসা থেকে হাঁটতে বের হই। কিছুক্ষণ পর একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে কয়েকজন নেমে আমার মুখে কিছু ধরে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে বুঝতে পারি, তারা আমাকে মারধর করছে। আমার আগের অস্ত্রোপচারের জায়গাগুলোতে আঘাত করে। মোবাইল নিয়ে নেয়। তাদের কথা বলার ভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে, তারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়।’

তিনি আরও জানান, গত ১১ মাস ধরে তাকে বেনামি চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ওই চিঠিতে তাকে অখণ্ড ভারত ও ইসকনের পক্ষে কথা বলা এবং ইসলাম ও ধর্মীয় দলগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ঘটনার পর পঞ্চগড়ে ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানায়।

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘উদ্ধারের সময় ইমাম মুহিবুল্লাহ মিয়াজী শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।’

জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, টঙ্গী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পর পঞ্চগড় জেলা পুলিশকে অবহিত করা হয়। বর্তমানে উভয় থানার সমন্বয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে আহত ইমামকে দেখতে যান। এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ছিলেন।

এম