প্রত্যন্ত গ্রামের সবুজ প্রকৃতির মাঝে নজর কাড়ে ভিন্ন আদলে গড়া ‘বাইতুল মামুর মসজিদ’। মসজিদটি টানেল আকৃতির হওয়ায় এটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘টানেল মসজিদ’ নামে। এর নান্দনিক নির্মাণশৈলী মনোমুগ্ধ করেছে সবাইকে। যেন সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে এক অপূর্ব সৌন্দর্যের নিদর্শন।
বাইতুল মামুর মসজিদটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালালবাজার ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামে অবস্থিত। একই গ্রামের শিল্পপতি ফরহাদ হোসেন নেহাল চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মসজিদের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরিপূর্ণ হতে এখনো সময় লাগবে। এর মধ্যেই মসজিদটি সৌন্দর্যে মুগ্ধ করছেন মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের। স্থানীয় মানুষও খুশি, কারণ দূরদূরান্তের মানুষ তাঁদের গ্রামে আসছেন মসজিদটি দেখতে ও এখানে নামাজ আদায় করতে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শিল্পপতি নেহাল চৌধুরী ২০২১ সালে তাঁর বাড়ির সামনে মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠান এর নকশা প্রণয়ন করে। এখন পর্যন্ত মসজিদের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও পুরো কাজ শেষ হলে সৌন্দর্য আরও বাড়বে। এরই মধ্যে এখানে দলবেঁধে মুসল্লিরা আসছেন নামাজ আদায় করতে। চারপাশে সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা মসজিদটিতে একসঙ্গে প্রায় ৪০০ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। ভিম ও কলাম ছাড়া মসজিদটি আরসিসি ঢালাইয়ে টানেল আকৃতিতে নির্মিত। দেওয়ালের পরিবর্তে পশ্চিম ও পূর্ব পাশে গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। দুই পাশে লম্বা জানালা রয়েছে। দুপুরে পুকুরের জলে মসজিদের প্রতিবিম্ব পড়ে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়। রাতে ভেতরের আলো জ্বলে উঠলে এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। সামনের পুকুরের পানিতে মসজিদের প্রতিফলন তখন যেন এক শিল্পকর্মের মতো মনে হয়।
মসজিদটি দেখতে আসা কলেজছাত্র ফয়সাল মাহমুদ ও মেহেদী মাসুম বলেন, শুনেছিলাম এখানে অসাধারণ একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। অনেক দূর থেকে এসেছি দেখার জন্য। এসে আসর ও মাগরিবের নামাজ আদায় করেছি। ভেতরের কারুকাজ ও বাইরের নকশা-সব মিলিয়ে অসাধারণ।
স্থানীয় বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, আগে এখানে ছোট একটি পুরোনো মসজিদ ছিল। পরে এলাকার শিল্পপতি নেহাল চৌধুরী ও তাঁর ভাই সেটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ঢাকার এক প্রকৌশলীকে এনে কাজ শুরু হয়। সবাই চেয়েছিল একটু ব্যতিক্রমধর্মী মসজিদ হোক। ২০২১ সালে নেহাল চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করান। এরপর থেকে বহু দূর থেকে মানুষ এসে মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন ও নামাজ আদায় করছেন। এতে মহাদেবপুর গ্রামটি এখন অনেকের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম বলেন, মসজিদটি টানেল আকৃতিতে নির্মাণ করা হয়েছে। এর পর থেকেই দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এসে নামাজ আদায় করছেন এবং মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুরাদ বলেন, মসজিদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এখনো ৪০ শতাংশ কাজ বাকি। কাজ শেষ হলে এটি সৌন্দর্যের দিক থেকে অনন্য এক স্থাপনা হবে। অনেক দূর থেকে মানুষ মসজিদটি দেখতে আসছেন।
এসএইচ