তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে একদিকে চার শিক্ষক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে তাদের মধ্যে একজনকে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নোয়াখালী সদরের কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শামছুদ্দীন মাসুদকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জারি করা এক অফিস আদেশে তাকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যমান শূন্য পদে স্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে মাসুদ বলেন, “আমার বদলিতে কোনো দুঃখ নেই। আমরা যেখানে থাকি, আন্দোলন চলবে।”
এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পরীক্ষায় বাধা সৃষ্টি ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চার শিক্ষক নেতাকে শোকজ নোটিশ পাঠায়।
শোকজপ্রাপ্ত নেতারা হলেন—
খায়রুন নাহার লিপি — আহ্বায়ক, প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ
মো. শামছুদ্দীন মাসুদ — সভাপতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি
মো. আবুল কাশেম — সভাপতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি
মো. মাহবুবার রহমান — সমন্বয়ক, প্রাথমিক শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ
তাদের তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
শোকজ নোটিশে বলা হয়, ৭–১০ নভেম্বরের আন্দোলনের পর সরকার ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দাবিগুলো সমাধানে গুরুত্বের আশ্বাস দেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারির পরও শিক্ষক নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন এবং ১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষা না নেওয়ার আহ্বান জানান—এমনটাই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নেতাদের নির্দেশে কয়েকটি অঞ্চলে কিছু শিক্ষক পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে এমন আচরণ কর্মচারী আচরণ বিধিমালা, ২০১৮–এর লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করা হয়।
শোকজ পাওয়ার পর শিক্ষক নেতারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছেন। মো. শামছুদ্দীন মাসুদ জানিয়েছেন, বুধবার থেকে উপজেলা বা থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, ৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়েছিলেন খায়রুন নাহার লিপি।
এম