আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনীর এলিট ফোর্স কাপসাট সরকার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছিল। বিদ্যুৎ ও পানি সংকট, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগ দাবি করে আসছিলেন।
দুই সপ্তাহ আগে রাজধানী আন্তানানারিভোতে শুরু হয় ব্যাপক আন্দোলন। প্রথমে জীবনযাত্রার সংকট নিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরবর্তীতে রূপ নেয় দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে। শনিবার সেনাবাহিনীর শক্তিশালী কাপসাট ইউনিটের সদস্যরা ব্যারাক ছেড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।
এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সোমবার জানা যায়, প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি ফ্রান্সের একটি সামরিক বিমানে করে দেশ ছেড়েছেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নিজেই দেশত্যাগের তথ্য নিশ্চিত করেন। সেখানে জানান, নিজের জীবন রক্ষার জন্য তিনি ‘নিরাপদ’ স্থানে রয়েছেন।
আন্দ্রির দেশত্যাগের পর মাদাগাস্কারের সংসদ সদস্যরা তাকে অভিশংসনের উদ্যোগ নেন। তবে আন্দ্রি সংসদ ভেঙে দেন। সংসদ সদস্যরা তার এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। কয়েক ঘণ্টা পরই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয়।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল মিখায়েল রান্দ্রিয়ানিরিনা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্যারামিলিটারি বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা আপাতত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবে। পরবর্তীতে বেসামরিক উপদেষ্টা ও প্রতিনিধিদের যুক্ত করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর এই কাপসাট ইউনিটই ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানাকে সরিয়ে আন্দ্রি রাজোয়েলিনাকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বসাতে সহায়তা করেছিল। এবার সেই একই ইউনিট তার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি
এসএইচ