ঢাকা: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেন শেখ হাসিনা। এই ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করে দেশজুড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যেই জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী, সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, দলটির সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এছাড়া জামায়াতের আমির গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যুর কারণে তাদের আপিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করলেও এবার সেই একই ট্রাইব্যুনালে নিজের বিচার দেখতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে। তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক বিরোধী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর গুম, খুন, হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করলে দমন নীতির শিকার হয়েছেন।
দেশজুড়ে মানুষ ধীরে ধীরে অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে এবং এর চূড়ান্ত রূপ ফুটে ওঠে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমন করতে শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। ওই আন্দোলনে শত শত মানুষ নিহত হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।
পরবর্তীতে সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তা পরিচালিত হয় তারই গঠন করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
মামলার রায় আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। দেশের মানুষ এখন উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে, এ বিচার কতটুকু শাস্তিমূলক হতে পারে এবং ফ্যাসিস্ট এই হাসিনার ভবিষ্যৎ কী হবে।
পিএস/এসএইচ