• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘রোল মডেলের নগরী গড়তে নৌকায় ভোট দেবে মানুষ’ 


একেএম সুমন, রংপুর ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৪:১৪ পিএম
‘রোল মডেলের নগরী গড়তে নৌকায় ভোট দেবে মানুষ’ 

রংপুর: রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ ডিসেম্বর। ইতোমধ্যেই জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগসহ ১০ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য এ্যডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াকে মনোনয়ন দেয় দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মনোনয়ন চুড়ান্তের পর পাড়া মহল্লায় বৈঠক করে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন নগরবাসীর কাছে।

নির্বাচিত হলে নগর উন্নয়নে তার ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন সোনালীনিউজের সাথে। রসিক ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডালিয়া বলেন, আজকের রংপুর যে পিছিয়ে আছে তার কারণ হলো জাতীয় পার্টিকে বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করা। সিটির উন্নয়নগুলো স্থানীয় সরকার বিভাগের অধিনে থাকে আর সেই মন্ত্রণালয়টাই তো সরকারের আন্ডারে তাহলে সরকার দলের লোক মেয়র না হলে তো বঞ্চিত হবেই এটাইতো স্বাভাবিক বলে আমি মনে করি। উন্নয়নের এত প্রজেক্ট প্রোফাইল যায় রংপুর থেকে বারবার সে ফাইল ফেরত আসে। বাজেট পাস হয় না যে উন্নয়ন কর্মসূচি গুলো থাকে তারা তা বাস্তবায়ন করতে পারে না।

রংপুরের মানুষ অনেক পিছিয়ে আছে দাবি করে আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী বলেন, উন্নয়ন না হওয়ার ফলে মানুষের ভাগ্য খুলছে না, বেকারত্ব কমছে না, ছেলে মেয়েরা গার্মেন্টসে যাচ্ছে। রংপুরবাসী যদি আমাকে ২৭শে ডিসেম্বর ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে এখানেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। আমার সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত সুসম্পর্ক তিনি আমাকে খুব স্নেহ করেন ভালোবাসেন। তিনি আমার মত রংপুরবাসীকেও ভালবাসেন। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন রংপুরবাসী ভোট দিবেন আর ভুল করবেন না।

প্রধানমন্ত্রী রংপুরের পুত্রবধূ সজীব ওয়াজেদ জয় রংপুরের সন্তান সংসদের মাননীয় স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী পীরগঞ্জের এমপি তাই রংপুরবাসীকে আর বঞ্চিত করবেন না প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচিত হলে যে সমস্ত সমস্যাগুলো আছে তা নিরসনে কাজ করবো। যানজট এখন রংপুরের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠছে দিনদিন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যানজট নিরসনের ঘোষণা দেব, রাস্তাঘাট নির্মাণ করব। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী রাস্তাগুলোকে ডাবল লেনে উন্নীত করেছেন। তিনি তো রংপুরকে বিভাগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন, সিটি কর্পোরেশন করেছেন, মেট্রপলিটন করেছেন, ছয়টি থানা দিয়েছেন। রংপুরের এ কাজ গুলোকে রোল মডেলের অবস্থায় নিয়ে আসতে গেলে অবশ্যই সরকারি দলের মেয়র একান্তভাবেই দরকার। আর মেয়র নির্বাচনে জনগণ যদি ভুল করে তাহলে সারা জীবনের জন্য রংপুরবাসী পিছিয়ে যাবে।

আপনারা দেখেছেন এই দেশে তো অনেক সরকারই ক্ষমতায় এসেছে রংপুরের জন্য কি করেছে। এরশাদ সাহেবও তো এসেছেন রাষ্ট্রপতি ছিলেন নয় বছর কিন্তু রংপুরের ভাগ্য পরিবর্তন করেননি। তিনি সারাদেশে হয়তো উন্নয়ন করেছেন কিন্তু রংপুরে শুধু নিয়ন বাতি ছাড়া আর কিছুই দেননি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ক্ষমতায় এসে অনেক কিছু দিলেন আমাদের উচিত নয় কি প্রধানমন্ত্রীকে রংপুরের মেয়র উপহার দেয়া? রংপুরবাসী যদি এই মেয়র উপহার দেয় আমি তার কাছ থেকে কাজ এনে আমি তা করতে পারব বলেই বিশ্বাস করি।

মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যদি আমরা উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে যাই তাহলে রংপুরের মানুষ প্রশ্ন করতে পারবে যে আমরা তো প্রধানমন্ত্রীর মার্কায় ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছি তাহলে আমরা কেন আমাদের সুবিধা পাচ্ছিনা। ভোট তো দিলাম তাহলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবো কেন? তখন জনগণ প্রশ্ন করতে পারবে আমার কাছে।

শ্যামা সুন্দরী খালের দুপাশে মাটি ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে সেগুলিকে ওয়ানওয়ে রাস্তা তৈরি করব যাতে রিক্সা, অটো রিক্সা চলাচল করতে পারে। স্থানীয় সরকারের আওতায় যে স্কুল-কলেজগুলো আছে তা উন্নয়নের চেষ্টা করব, নারীদের কাজের সুযোগ আছে সেগুলি আরো বৃদ্ধি করার চেষ্টা করব। ছেলে-মেয়েরা যে বেকার রয়েছে তাদের বেকারত্ব ঘোচাতে কাজ করব। আমি মেয়র হলে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে ৫টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করব। রসিকের যে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে সেগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার চেষ্টা করব। নারীদের জন্য কুটির শিল্প বেশি করে করার চেষ্টা করব কারণ কুটির শিল্প স্থানীয় সরকার বিভাগের সাথে সম্পর্কিত।

এসএমইর আন্ডারে যে কাজগুলো আছে তা করবার চেষ্টা করব আপনারা জানেন আমি এর আগে সংসদ সদস্য ছিলাম। তাই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা রয়েছে আমি পারবো রংপুরের উন্নয়ন করতে। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রজেক্ট নিয়ে আসার বিষয়গুলো আমি খুব ভালো জানি। আমি যদি নির্বাচিত হলে বিধি মোতাবেক সংসদে উত্থাপনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবো। আমাদের স্পিকার রয়েছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি আছেন তাকে এ বিষয়গুলি জানিয়ে সংসদে উত্থাপনের চেষ্টা করাবো।

ডালিয়া আরও বলেন, রংপুর বিভাগের যে আট জেলা রয়েছে তার মধ্যে রংপুর অঞ্চলে পাঁচটি জেলা প্রতিটিতেই প্রায় এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সবাই নৌকার। ২/৩টি আসন জাতীয় পার্টি পেয়েছে ঐক্য জোটের সরকারে থাকায়। আওয়ামীলীগের জনপ্রতিনিধি থাকায় সে এলাকাগুলো অনেক উন্নতি করেছে কারণ স্থানীয় সরকারের যে বরাদ্দ গুলি আসে সেগুলি এমপিদের সাথে সমন্বয় করে ফলে বেশি উন্নয়ন করতে পারে তারা।

আমিও আশ্বস্ত করতে চাই আমার সেই পরিচয়টা আছে এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাথেও আমার সখ্যতা আছে তিনি আমাকে ব্যক্তি নামেই চেনেন তাই আমি উন্নয়ন করতে পারবো।

আমিতো রংপুরের মেয়ে জন্মেছি রংপুরেই মৃত্যু হবে রংপুরে ভাই বোন বন্ধু যাদের যেভাবেই ডেকেছি সবাই আমাকে চেনে জানে সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তির সরকারকে আগামী ২৭ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। আমি বিশ্বাস করি রংপুরের মানুষ আর ভুল করবেনা প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করবে।

সোনালীনিউজ/এম
 

Wordbridge School
Link copied!