যশোর: সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের চান্দুটিয়া গ্রামের কথিত জ্বীনের কবিরাজ বিল্লাল হোসেনের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। রোববার দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়।
কর্মকর্তাদের দেখেই আসন ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যান ভুয়া কবিরাজ বিল্লাল। এসময় তাবিজ-কবজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সিভিল সার্জনের নির্দেশে ভুয়া কবিরাজ বিল্লালের আস্তানায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান টিমে ছিলেন সদর উপজেলা হেলথ ইন্সপেক্টর এস আই নাজনীন নাহার, সহকারী হেলথ ইন্সপেক্টর মমতাজ বেগম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হায়দার আলী ও স্বাস্থ্য সহকারী শাহনাজ পারভীন।
সদর উপজেলা হেলথ ইন্সপেক্টর এস আই নাজনীন নাহার জানান, কথিত জ্বীনের কবিরাজ বিল্লাল হোসেন একজন প্রতারক। ভরণে বসে বিভিন্ন গোপন সমস্যা সমাধানের নামে তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়া প্রেমের তদবির দিয়ে মোটা অংকের টাকা লুফে নিয়েছেন। তার খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন শত মানুষ। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে রোববার ভুয়া কবিরাজ বিল্লালের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এসময় বিল্লাল হোসেন ভরণে থেকে ওঠে দৌড়ে পালিয়ে যান। তার আস্তানা থেকে তাবিজ-কবজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এস আই নাজনীন নাহার আরও জানান, ভবিষ্যতে প্রতারণা ব্যবসা করলে বিল্লালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের টিমের অভিযানকালে ভুয়াা কবিরাজ বিল্লাল দৌড়ে পালিয়ে যান।
বিল্লালের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছে তার প্রতারণার বিষয় অবগত করা হয়। জ্বীনের কবিবাজের নামে প্রতারণা না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, কবিরাজ বিল্লাল হোসেনের প্রতারণার বিল্লাল হোসেনের প্রতারণার বিষয়ে অবগত হওয়ার পর থেকে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নজরদারিতে ছিলেন। রোববার একটি টিম তার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে। তিনি পালিয়ে গেলেও তার লেখা তাবিজ, তাবিজ লেখার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কবিরাজ ব্যবসা করলে বিল্লালকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৩ সালের দিকে বিল্লাল হোসেন এমআই দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। বিল্লাল হোসেনের পিতা সন্তোষ পেশায় ছিলেন দিনমজুর। খুব বেশি আবাদী জমি না থাকায় পরের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চালাতেন। একদিন হঠাৎ করে এলাকাবাসী জানতে পারেন বিল্লাল হোসেনের জ্বিনে আছর করেছে। তিনি নাকি জ্বিনকে ডেকে ঘাড়ে নিয়ে ভরণে বসে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনছেন আর দোয়া তদবির দিচ্ছেন।
বছরের পর বছর ধরে তার এই প্রতারণা চলছে। গ্রামের মানুষ তাদের কাছে ব্যবস্থা নিতে যান না। এলাকায় বিল্লাল হোসেন ভুয়া কবিরাজ হিসেবে চিহ্নিত। বিগত দিনে তার অপচিকিৎসায় অপচিকিৎসায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়েছিলেন গোবিন্দপুর গ্রামের গৃহবধূ রেবেকা বেগম।
চিকিৎসার নামে সেই নির্যাতন করার ঘটনা এখনও মানুষের মুখে মুখে। স্বল্প সময়ে ধান্দাবাজির মাধ্যমে বিল্লাল হোসেন অঢেল ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন। চাটাইয়ের ঘরের পরিবর্তে এখন নির্মাণ করেছেন ৪টি কক্ষের একটি আলিশান বাড়ি। নিজে পালসার ব্যান্ডের মোটরসাইকেলে চলাফেরা করেন। কবিরাজ হওয়ার পর মাঠে ক্রয় করেছেন ৬/৭ বিঘা জমি। ফু দিয়ে টাকা আয় করে তিনি ভাগ্যের উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছেন।
এআর







































