• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় অতিবৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, চরম দুর্ভোগ


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি অক্টোবর ৬, ২০২৩, ০৯:২৮ পিএম
কুষ্টিয়ায় অতিবৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, চরম দুর্ভোগ

কুষ্টিয়া : বৃষ্টিতে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরবাসী, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও নিম্নআয়ের মানুষ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এলাকাবাসী জানান, শহরের বিভিন্ন জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষ নালা নির্মাণ করেছে ঠিকই, কিন্তু তা কোনো কাজে আসছে না। নালাগুলো অগভীর ও মাটিতে ভরে গেছে। এ কারণে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নালার ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে সড়কে উঠে আসে। এ ছাড়া মুষলধারে বৃষ্টি হলে নালার নোংরা পানি সড়কের পাশে অনেক বাড়িতেও ঢুকে যায়। তখন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ হয়।

বৃষ্টিতে কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোড, সরকারি কলেজ, মডেল থানা, র্যাবগলি রাস্তা, আর এ চৌধুরী খান রোড়, পেয়ারাতলা, জেলখানা, হাসপাতাল রোড, পূর্ব মজমপুর, পশ্চিম মজমপুর, কাটাইখান মোড় ও ছয় রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা প্রায় এক ফুট আবার কোথাও কোথাও দেড়-দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের সমাগম অনেকটাই কম। প্রবল বৃষ্টিতে ছাতাও যেন অসহায়। এমন চিত্রই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফুটে উঠেছে। কুষ্টিয়া শহরের বড় বাজার ও বকচত্বরসহ বিভিন্ন বাজারে ছাতা মাথায় ঘোরাঘুরি করছেন কয়েকজন ক্রেতা।

এদিকে বাজারের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা পড়েন বিপাকে। শহরেরএক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি যে জায়গায় সবজি বিক্রি করি, সেখানে পানি জমে গেছে। ফলে বেশির ভাগ সবজি এখনো বিক্রি করতে পারিনি।’

বেলা দেড়টার সময় কুষ্টিয়া গালর্স স্কুলের সামনের রাস্তায় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তায় পানি জমে থাকায় তারা পার হতে পারছে না। শিক্ষার্থীরা জানায়, রাস্তায় পানি থাকায় জুতা পরে রাস্তা পার হতে পারছে না। ড্রেনগুলো যদি পরিষ্কার থাকত, তাহলে দ্রুত পানি অপসারণ হয়ে যেত। এতে দুর্ভোগে পড়তে হতো না তাদের।

বৃষ্টি হলেই রিকশা চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। ২০ টাকার ভাড়া তখন ৫০ টাকা হয়ে যায়। ভাড়া বৃদ্ধি হওয়ার কারণে অনেকেই প্রয়োজন থাকলেও বাসা থেকে বের হয় না।

কুষ্টিয়া শহরের সড়ক ছাড়াও জেনারেল হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, আদালত প্রাঙ্গণ, ডিসি কোর্ট চত্বর, বিভিন্ন অফিস, পৌর বাজার, দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে।

বেলা ৩টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ এলাকাসহ বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি নামেনি। এ পরিস্থিতির জন্য কুষ্টিয়া পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন নাগরিকরা।

কুষ্টিয়া পৌর বাজারে আড়তের ব্যবসায়ী বলেন, ‘আড়তে পানি ঢুকে পেঁয়াজের বস্তা ডুবে গেছে। ইট দিয়ে উঁচু করেও মাল রক্ষা করা যাচ্ছে না। বেচাকেনাও করতে পারছি না। ড্রেন পরিষ্কার না থাকায় পানি নামতে পারছে না।’

শুকনা-কাঁচামরিচ, আলুসহ সব মালামাল পানিতে ডুবেছে। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সিলেট, সুনামগঞ্জের মতো হবে মনে হচ্ছে। পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা নেই।’

পৌর বাসিন্দা আনোয়ার বলেন, ‘শহরের সব সড়ক ডুবে গেছে। দেখার কেউ নেই। স্কুলের বাচ্চাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভার কোনো উদ্যোগ নেই।’

কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘হঠাৎ ভারী বর্ষণে পানি বেড়েছে। কিছুটা সময় গেলে পানি নেমে যাবে।’

ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত উন্নয়নকাজ চলছে। পৌর নাগরিকরা যেন যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য না ফেলেন। এতে ড্রেনের মুখ আটকে যায়।’

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!