রংপুর: রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কয়েদির মৃত্যুকে ঘিরে বন্দিদের মধ্যে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় দুই কারারক্ষী কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জোরদার করা হয়েছে কারাগারের নিরাপত্তা। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে তদন্ত কমিটি গঠন ও বরখাস্তের কথা জানান রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
কারাগারের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কারাগারে থাকা যাবজ্জীবন মামলার সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি বাহারুল বাদশা গাছের আমরা পাড়তে গেলে কয়েকজন কয়েদি এতে বাঁধা প্রদান করে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে কয়েদি বাহারুল বাদশার মাথায় খড়ি দিয়ে আঘাত করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাৎক্ষনিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে দুপুর ১২টার দিকে একই মামলার সাজা প্রাপ্ত আসামী বাহারুলের আপন তিন ভাইয়ের সাথে ঝগড়া শুরু হয় অন্য কয়েদিদের মধ্যে। এ ঘটনায় কয়েদিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এক পর্যায়ে কারারক্ষীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুড়েন। খবর পেয়ে ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানসহ পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে যান। সেখানে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষুব্ধ কয়েদিদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান। সেই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
এদিকে ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারাগারের ভেতরে এবং বাইরে র্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করাসহ সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায় কারাগারের আশেপাশে।
কারা উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, কারাগারের ভিতরের ঘটনায় দায়িত্বরত করারক্ষী মোতালেব হোসেন ও শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত টীম গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে ও বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উক্ত ঘটনায় দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এঘটনায় কারাগারে থাকা কোন কয়েদি, বন্দি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। সাজাপ্রাপ্ত জেএমবি ও জঙ্গিরা স্বাভাবিকভাবে তাদের সেলে আছে। অন্যদিকে আইনী প্রক্রিয়া শেষে নিহত বাহারুলের মরদেহ রংপুরের পীরগঞ্জের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
এমএস







































