বরগুনা: দিনটি ছিল জন্মদিন একই সঙ্গে বিবাহ বার্ষিকী। অথচ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বরগুনার আলোচিত নারী উদ্যোক্তার।
যার হাতে তৈরি কেক কেটে বরগুনাবাসী জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকীসহ উৎসব পালন করে থাকলেও তার জন্মদিন এবং বিবাহ বার্ষিকীর কেক কাটার আগেই মরণঘাতী ডেঙ্গুর কাছে হেরে গিয়ে না ফেরার দেশে জেরিন ক্রেকার্সের উদ্যোক্তা আজমেরী মোনালিসা জেরিন (২৭)।
তিনি বরগুনা-১ আসনের প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য ও বরগুনার প্রথম জেলা চেয়ারম্যান জাফরুল হাসান ফরহাদের ছোট মেয়ে। জেরিনের পরিবারের দাবি হাসপাতালের চিকিৎসা অবহেলায় তার মৃত্য হয়েছে। তার ২ বছরের একটি শিশু কন্যা রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জেরিন ও তার স্বামী রাকিবুল হাসান রাজন গত বুধবার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এ সময় চিকিৎসকের দেয়া পরীক্ষায় তার রক্তে ১ লাখ ৪৪ হাজার প্লাটিলেট থাকলেও এক দিনের ব্যবধানে তা ৪৪ হাজারে নেমে যায়।
এরপর আবার ২ হাজার রক্তের প্লাটিলেট বৃদ্ধি পেলে শুক্রবার দুপুরে জেরিন হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আসে। সন্ধ্যার দিকে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষায় তার রক্তে প্লাটিলেট পাওয়া যায় মাত্র ২৫ হাজার।
এরপর ক্রমাগত জেরিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাত পৌনে নয়টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে স্ত্রীর মৃত্যুর শোকে তার স্বামীর মাইল্ড স্ট্রোক হয়েছে বলে পরিবার থেকে জানা গেছে।
জেরিনের বড় ভাই মঈনুল হাসান রাসেল বলেন, আমার বোনের রক্তের প্লাটিলেট যখন ১ লাখ ৪৪ হাজার থেকে কমে মাত্র ৪৪ হাজার হয় তখন উন্নত চিকিৎসার দাবি করলেও চিকিৎসকরা তা কর্নপাত করেননি। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভালো হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে এধরনের ঘটনা ঘটতো না।
আমার বোনের চিকিৎসায় একরকম অবহেলা করা হয়েছে। চিকিৎসক যদি আমাদের মতামতকে অবজ্ঞা না করে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করতো সুস্থ হয়ে যেত। বরগুনার নিম্নমানের চিকিৎসা সেবা বন্ধের পাশাপাশি চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন। এছাড়াও জেরিনের মৃত্যুর পর বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আর, এম, ও) তাসকিয়া সিদ্দিকী বলেন, সকালে কিছুটা সুস্থতা অনুভব করে এবং তার জন্মদিন থাকায় তিনি বাসায় চলে যান। পরে সন্ধ্যায় আবারও শারীরিক অবস্থা খারপ হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এলে জেরিনকে ভর্তি করা হয়। তবে ভর্তি হওয়ার ঘন্টাখানেক পরেই তার মৃত্যু হয়।
চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি ছিল না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রায় চার শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক থেকে দেড়শ রোগীই ডেঙ্গু আক্রান্ত।
এআর







































