• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

রাজশাহীতে খোলা আকাশের নিচে চামড়া রাখায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী 


রাজশাহী ব্যুরো জুন ৯, ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
রাজশাহীতে খোলা আকাশের নিচে চামড়া রাখায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী 

রাজশাহী: রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের বেলপুকুর রেলগেটে ঈদুল আজহায় কোরবানিকৃত পশুর চামড়া খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। 

এতে ওই এলাকাবাসী চামড়া গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অবিক্রিকৃত চামড়াগুলো মহাসড়কের পাশে ফেলে রাখায় সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। 

এই সড়কে মানুষদের নাকে কাপড় বা রোমাল চলাচল করতে হচ্ছে। চামড়ার গন্ধে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। চামড়ার পচা দুর্গন্ধ থেকে পরিত্রাণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। 

তবে চামড়া ব্যাবসায়ীরা জানান, ভোর পর্যন্ত শ্রমিক দিয়ে চামড়াগুলো লবণজাত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের পাশে পড়ে থাকা এসব চামড়া সরিয়ে ফেলা হবে।

সরেজমিনে গিয়ে বেলপুকুরের পশু চামড়া আড়তে দেখা গেছে, এখানে সাত থেকে আটজন ব্যবসায়ী ঈদের দিনে কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া কিনেছেন। 

চামড়াগুলো তাদের গোডাউন ছাড়াও খোলা আকাশের নিচে লবণজাত করে রাখা হয়েছে। এছাড়া আশপাশে পড়ে আছে বিক্রি না হওয়া গরুর মাথার চামড়া, ছাগল, ভেড়া ছাড়াও কাটা বা বিক্রি হয়নি এমন চামড়া। এসব চামড়া মহাসড়কের পাশে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। পড়ে থাকা চমড়া কুকুর নিয়ে টানা-টানি করতে দেখা গেছে। কাছে যেতে কুকুর চামড়া রেখে পালিয়ে যায়। এতে করে দুর্গন্ধ ছড়ানোর জন্য মানুষ নাকে কাপড় দিয়ে চলাচল করছে। 

বেলপুকুর এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ঈদের রাতে যে চামড়াগুলো বিক্রি হয়নি সেগুলো এভাবে সড়ক ও এর আশপাশে ফেলে গেছে। 

এ চামড়া থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মানুষের চলাফেরা করতে কষ্ট হচ্ছে। মানুষ নাকে কাপড় ও রুমাল দিয়ে চলাচল করছে। এতে করে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। যদি ওপর (প্রশাসন) থেকে চাপ দেয় সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এ চামড়াগুলো দ্রুত সরায়। না হলে এভাবে পড়ে থেকে দুর্গন্ধ ছাড়ায়। 

পথচারি ইমরান খান বলেন, খোলা আকাশের নিচে পশুর চামড়া রাখা হয়েছে। চামড়ার গন্ধ আছে। সেটি বাতাসের মাধ্যমে চারপাশে ছড়াচ্ছে। এতে করে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ এই পথে চলাচল করতে কষ্ট পাচ্ছে। যারা আসলে চামড়া ব্যবসায়ী, তাদের সড়কের আশপাশের যত্রতত্র পড়ে থাকা চামড়াগুলো অপসারণ করা জরুরি। পড়ে থাকে চামড়াগুলো অনেক সময় শিয়াল কুকুর সেগুলো টেনে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখছে। 

রাজশাহী মহানগর, চারঘাট, বাঘা, পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কুরবানি হওয়া পশুর চামড়াগুলো কেনাবেচা হয় বেলপুকুরে আড়তে। 

চামড়া ব্যবসায়ী আকসের আলী বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আবহাওয়া গরম থাকলেও চামড়ার ক্ষতি হয়নি। তবে ল্যাম্পি (করোনা চামড়া) আক্রান্ত যে চামড়াগুলো রয়েছে সেগুলো কেউ কিনছে না। যদিও এটার সংখ্যা খুবই কম। ১০০টিতে পাঁচটি এ রকম চামড়া আসছে। ঈদের রাতে তাড়াহুড়ো করে কাজ করা হয়েছে। সেই সময় এই ধরনের চামড়াগুলো তেমন ধরা পড়েনি। তবে বিক্রি করার সময় প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে এ চামড়ার। 

তিনি বলেন, শনিবার দুপুর থেকে রাতভর শ্রমিকরা চামড়া নিয়ে কাজ করেছে। কোনো কোনো আড়তে এখনো লবণ দেওয়ার কাজ চলছে। সড়কের পাশে যে চামড়াগুলো পড়ে রয়েছে সেগুলো শ্রমিক দিয়ে তুলে ফেলা হবে। গতরাতে কে কখন কীভাবে ফেলে গেছে তা তে বলা সম্ভব না। তবে বড় আড়তদাররা শ্রমিক দিয়ে এগুলো তুলে মাটিতে পুঁতে ফেলে।

চামড়া ব্যাবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন,  ছাগলের চামড়া কিনেছি ৩৫০টি। গরুর কোনো চামড়া কেনা হয়নি। কিছু চামড়া লবণজাত করতে বাকি আছে, সেগুলো করা হয়েছে। গরুর চামড়ায় লবণ গড়ে ৫ কেজি, ছাগলের দেড় থেকে দুই কেজি প্রয়োজন পড়ছে। একটি গরুর চামড়ায় লবণজাত করতে ৩০ টাকা নেবে শ্রমিকরা। আর লবণ ও শ্রমিক মিলে একটা চামড়ায় ১০০ থেকে ১৩০ টাকা খরচ পড়ে আড়তে। এর সঙ্গে ভ্যান ভাড়া যুক্ত হবে। 

আবু বক্কর বলেন, করোনা (ল্যাম্পি) চামড়া কম। এ বছর গরমে চামড়া নষ্ট হয়নি। এবার গত বছরের তুলনায় চামড়া সংরক্ষণে খরচ বেড়েছে। বেড়েছে লবণের খরচ, বেড়েছে শ্রমিকের খরচ। একটা চামড়া কেনার পরে পরিবহন, লবণজাত ও শ্রমিক মিলে খরচ পড়ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এ টাকা চমড়া কেনার দামের সঙ্গে যুক্ত হবে। 

এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.কে.এম. নূর হোসেন নির্ঝর জানান, খোলা আকাশের নিচে কেউ চামড়া রাখতে পারবে না। বিষয়টি জরুরি ভিত্তি সরানোর জন্য বলা হয়েছে। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!