• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বরিশাল বিভাগজুড়ে আশ্রয় কেন্দ্রের সংকট, দুর্যোগে ঝুঁকিতে লাখো মানুষ


বরিশাল প্রতিনিধি  জুন ৯, ২০২৫, ০৯:৫২ পিএম
বরিশাল বিভাগজুড়ে আশ্রয় কেন্দ্রের সংকট, দুর্যোগে ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

বরিশাল: বরিশাল বিভাগজুড়ে ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয় কেন্দ্রের চরম সংকট বিরাজ করছে। বর্তমান কেন্দ্রগুলোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই সংস্কারযোগ্য, আর নতুন কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। ফলে উপকূলীয় জেলার লাখ লাখ মানুষ প্রতিটি দুর্যোগেই থাকেন আতঙ্কে।

সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সাগরকূলবর্তী চরভূমি ঢালচর ও পূর্ব ঢালচর। প্রায় ৪ হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও, সেখানে নেই কোনো সাইক্লোন শেল্টার। শুধু ঢালচর নয়, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী আরও ৯টি চরে নেই একটিও আশ্রয় কেন্দ্র। 

ভোলা জেলার চিত্রটিও ভিন্ন নয়। ২০ লাখ মানুষের জন্য ৮৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া কয়েক লাখ গবাদি পশুর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মাটির কিল্লা রয়েছে মাত্র ১৪টি।

বিষখালি নদীর পাড়ঘেঁষা বরগুনা সদর উপজেলার উত্তর ডালঙাঙ্গা, লতাবাড়িয়া এবং মাছখালি গ্রামের চিত্র আরও করুণ। এসব গ্রামের কোনোটিতেই নেই সাইক্লোন শেল্টার বা পাকা বাড়িঘর। 

প্রায় প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়েই এলাকা তিনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, বরগুনা জেলায় অনেক জায়গায় এখনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নেই। পুরনো কেন্দ্রগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। নতুন করে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ এবং পুরনোগুলো সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলার চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেখানে যত সাইক্লোন শেল্টার আছে, তাতে জেলার ১০ ভাগের ১ ভাগ মানুষেরও জায়গা হয় না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ফলে প্রত্যেক দুর্যোগেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন হাজারো মানুষ।

সরকারি তথ্য বলছে,বরিশাল ৫৪১টির মধ্যে ২০০টি মেরামতের প্রয়োজন,পটুয়াখালী: ৮৪০টির মধ্যে ৫৮টি সংস্কারযোগ্য, পিরোজপুর ২৬৬টির মধ্যে ২০০টি জরাজীর্ণ, বরগুনা ৬৭৩টির মধ্যে ৫৫০টিরও বেশি সংস্কারের তালিকায়, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট ৩,২৯৫টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ১,০৭১টির সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি মাঠ প্রশাসন নতুন করে অন্তত ৩৮৮টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাবনা দিয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার জানিয়েছেন, সরকার এ বিষয়টি নিয়ে সজাগ রয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো সংস্কার এবং নতুন করে কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ প্রবণ বরিশাল বিভাগে এই অব্যবস্থাপনা জনমনে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর মতো দুর্যোগ সামনে রেখে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এআর

Wordbridge School
Link copied!