• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

তুমি না মরলে মাহীরের হতে পারব না, জোবায়েদের মৃত্যুর আগে বর্ষা


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
তুমি না মরলে মাহীরের হতে পারব না, জোবায়েদের মৃত্যুর আগে বর্ষা

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁর ছাত্রী ও প্রেমিকা বারজিস সাবনাম বর্ষা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন বর্ষার প্রথম প্রেমিক মাহীর রহমান। পুলিশ বলছে, ত্রিভুজ প্রেমের জটিল সম্পর্কের পরিণতি ছিল এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এসএন নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, জোবায়েদ পুরান ঢাকার বংশালের নুরবক্স লেনের একটি বাসায় ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে খুন হন। ছাত্রী বর্ষা একই সময়ে মাহীর ও জোবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। এই সম্পর্ক থেকে বের হতে বর্ষা নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজান।

পুলিশ জানায়, ২৬ সেপ্টেম্বর বর্ষার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাহীর জানতে পারেন তাঁর প্রেমিকা আরও একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত। তখনই তারা জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরে মাহীর ও তাঁর বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলান ছুরি কিনে ১৯ অক্টোবর বর্ষার বাসায় অবস্থান নেন। বর্ষা তখন তাঁর শিক্ষক ও প্রেমিক জোবায়েদকে ডেকে আনেন।

সিঁড়িতে বসেই ঘটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। তদন্তে জানা গেছে, জোবায়েদ বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে শেষ মুহূর্তে বলেন, “আমাকে বাঁচাও।” কিন্তু বর্ষার উত্তর ছিল— “তুমি না সরলে আমি মাহীরের হতে পারব না।” কিছু সময় পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জোবায়েদ মারা যান।

অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, মাহীর ও বর্ষার সম্পর্ক দেড় বছর ধরে, আর জোবায়েদ প্রায় এক বছর ধরে বর্ষাকে পড়াতেন। মেয়েটি দুজনের কারো সঙ্গেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারেনি। ফলে সে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনাটি বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশে মিল আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ কৌশলে মাহীরের মাকে ব্যবহার করে তাঁকে থানায় আসতে বাধ্য করে। এটি পুলিশের পরিকল্পিত কৌশল ছিল, স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ নয়।

লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, বর্ষা স্বীকার করেছেন যে জোবায়েদ মারা যাওয়ার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে আরও জানা গেছে, তিনতলার সিঁড়ি থেকে তিনি নিচে হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেন।

পুলিশ ইতিমধ্যে বর্ষা, মাহীর ও তাঁর বন্ধু আইলানকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নিহত জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। সোমবার তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এসএইচ
 

Wordbridge School
Link copied!