জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ ও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বুধবার (১২ নভেম্বর) ১২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
মামলাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জন আসামি রয়েছেন। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চে একজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রসিকিউশন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এ মামলায় ১৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ, যিনি জুলাই আন্দোলনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী ও ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা সম্পন্ন করেন।
এর আগের দিন, সোমবার (১০ নভেম্বর) ১২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আকিব রেজা খান, যিনি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের একজন ছিলেন। তার বক্তব্যে তিনি হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে এর আগে একাধিকবার সময় পরিবর্তন হয়। ৪ নভেম্বর, ২১ অক্টোবর ও ১৩ অক্টোবর নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী হাজির না হওয়ায় শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যে পুলিশের দুই উপপরিদর্শক (এসআই) রফিক ও রায়হানুল রাজ দুলাল জবানবন্দি দেন। তারও আগে ২৯ সেপ্টেম্বর অষ্টম দিনে তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তম দিনের শুনানিতে আহত অবস্থায় আবু সাঈদকে প্রথম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সিয়াম আহসান আয়ানকে জেরা করা হয়।
এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় গত ২৮ আগস্ট, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে। একই দিনে সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।
এ মামলার ৬ জন আসামি বর্তমানে গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন — এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। তাদের উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন আসামি পলাতক, যাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ২৭ আগস্ট মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তখন প্রসিকিউশনের পক্ষে বক্তব্য দেন।
এর আগে, গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেয়। তদন্ত সংস্থা ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এবং ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি আমলে নেয়।
এ মামলায় মোট ৬২ জন সাক্ষী রয়েছেন, যাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
এম







































