বিনিয়ােগকারীদের স্বার্থে শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত ওয়ালটনের

ঢাকা: সাধারণ বিনিয়ােগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে শেয়ারবাজারে আরো শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিক লিমিটেড। শেয়ার অ-লােড থেকে প্রাপ্ত অর্থ নতুন শিল্পে বিনিয়ােগের পরিকল্পনা করছেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকগণ। 

এ নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারমান অধ্যাপক শিবর্তী বাইয়াত-উল-ইসলামের সাথে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বৈঠক করেছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমছি) ও প্রধান নিই কর্মকর্তা (সিইও) গােলাম মুর্শেদ।

উল্লেখ্য, বাজারে ১০ শতাংশের কম শেয়ার থাকায় নতুন করে শেয়ার ছাড়ার অনুরােধ জানিয়ে ওয়ালটনসহ তিনটি কোম্পানিকে গত রোববার চিঠি দেয় বিএসইসি। চিঠিতে আগামি ১ বছরের মধ্যে ওই কোম্পানিগুলােকে বাজারে ১০ শতাংশ শেয়ারে উসীত করার অনুরোধ জানানাে হয়। ওই চিঠি ইস্যুর পর পরই শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক কমে যায়।

এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিএসইসি কার্যালয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের সাথে ওয়ালটনের এমডি বৈঠক করেন। বৈঠকে আলােচনার প্রধান বিষয় ছিলাে বিনিয়ােগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে নতুন শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছানো। 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান ও ওয়ালটন এমতির মধ্যে প্রস্তু অলেচনা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়ালটন।

সুত্র জানায়, এই মুহূর্তে বাজারে ওয়ালটনের শেয়ার রয়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। প্রাথমিকভাবে আগামি ৩ বছরে বাজার অরো ৪.০৩ শতাংশ শেয়ার ছাড়বে ওয়ালটন। ফলে বাজারে ওয়ালটনের লেনদেন যােগ্য শেয়ার হবে ৫ শতাংশ। ৩ বছর পরে বিএসইসির সঙ্গে আলােচনার ভিত্তিতে আরো ৫ শতংশ শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও গােলাম মুর্শেদ বলেন, পুঁজিবাজারের নিয়ম-নীতি মেনেই ব্যবসাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওয়ালটন। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারী ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ণের স্বার্থে বিএসইসি ঢেয়ালম্যানের সঙ্গে আমরা দেখা করি। পুঁজিবাজার উন্নয়ণের স্বার্থে পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে বাজারে ৫ শতাংশ শেয়ারে উন্নীত করতে বিএসইসির কাছে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের আবেদন ছিলাে। বিএসইসি'র চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অভিভাবক। পুঁজিবাজারের সামগ্রিক স্বার্থে তিনি ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের আবেদন বিবেচনা করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

কোম্পানি সচিব মােহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এসিএস বলেন, লক-ইন পিরিয়ডে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকগণের হাতে থাকা শেয়ার বাজারে ছাড়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিএসইসির অনুরােধের প্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় আরো শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকগণ একমত হয়েছেন। অফ-লোডকৃত শেয়ার থেকে প্রাপ্ত অর্থ তারা নতুন শিল্পে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের মােট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৪ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩। শুরু থেকেই বিনিয়োগকারীদের কাছে ওয়ালটনের শেয়ারের চাহিদা তুঙ্গে। তালিকাভুক্তির সময় ওয়ালটনের বাজার মূলধন ছিলো ৭ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। মঙ্গলবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ওয়ালটনের বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৭-৩১ কোটি টাকায়। যা বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সাৰ্বোচ্চ আর সামগ্রিকভাবে বাজার মূলধনে প্রামীণফোনের পরই অবস্থান ওয়ালটনের।

সোনালীনিউজ/এমএইচ