ঢাকা : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতের পর বন্ধ হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।
ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ অবস্থান করছে। কেউ প্রবেশ করতে চাইলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের কাউকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি।
সকালে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ক্যাম্পাস যেহেতু বন্ধ, তাই আমরা সেখানে কোনো কর্মসূচি পালন করছি না। তবে আমাদের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ‘খুনের দায়ে’ জড়িতদের বিচার ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা।
এই কর্মসূচিতে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো গাড়ি রাস্তায় চলবে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বেলা ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার আমাদের পরিকল্পনা চলছে। পুরো ক্যাম্পাস পুলিশ-প্রশাসন ঘিরে রেখেছে। ক্যাম্পাসে কোনো শিক্ষার্থীকে থাকতে দেওয়া হয়নি।
তাই ম্যাস গ্যাদারিং করা যাচ্ছে না। তবে ক্যাম্পাসের আশেপাশে যেখানে শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন, আমরা সেখানে যাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে রাজধানীর বিভ্ন্নি স্থানে বিক্ষোভ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নর্থসাউথ, ব্র্যাক, ইস্টওয়েস্ট, বিউপিসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। শনির আখড়ার ওই দিকে পুরোপুরি ব্লক। সায়েন্স ল্যাবেও শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছে।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যেতে বলা হয়। সন্ধ্যার মধ্যেই সব শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করেন। তবে শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে তাদের বাসভবনে অবস্থান করছেন।
শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে ত্যাগ করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্দেশনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে আবাসিক হল ত্যাগ করেছে। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানায় ও তাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে।
এমটিআই