• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি, বেতন ও ভাতা বৈষম্য নিয়ে কিছু কথা


নিউজ ডেস্ক অক্টোবর ১৫, ২০২০, ০৩:২৩ পিএম
সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি, বেতন ও ভাতা বৈষম্য নিয়ে কিছু কথা

ঢাকা: পদোন্নতি সংক্রান্তঃ “সরকারি চাকরিতে সরকারকে যোগ্যতানুসারে সকল পদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করার অনুরোধ করছি” এমন একটি পোস্টে এক কর্মচারী ভাই কমেন্ট করেছিল, সরকার এতো পদের সন্নিবেশ করে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে পারবে না।

আমরা মনে করি, সরকার যেহেতু সকল দপ্তর-অধিদপ্তর-পরিদপ্তর-সংস্থায় কাজের পদ্ধতির বিভিন্নতায় এতোগুলো পদের সৃষ্টি করেছে। তাই সরকার চাইলে সরকারি সকল পদের সন্নিবেশ ঘটিয়ে সকল পদের পদোন্নতির ব্যবস্থাও করতে পারবে, এজন্য সরকারের স্বদিচ্ছা যথেষ্ট।

সরকারি চাকরিতে সকল ডিপার্টমেন্টে ক্যাডার পদে এক ও অভিন্ন নিয়োগ এবং পদোন্নতি বিধিমালা রয়েছে, সরকারের স্বদিচ্ছা থাকলে তেমনি সকল নন-ক্যাডার পদে এক ও অভিন্ন নিয়োগ এবং পদোন্নতি বিধিমালা করতে পারে।

বেতন সংক্রান্তঃ পে-স্কেল/২০১৫ অনুসারে সরকারি চাকুরিতে ২২টি বেতন গ্রেড রয়েছে, ২০টি গ্রেড সরাসরি ও ২টি গ্রেড ২০টির উপরে লুকোচুরি করে রাখা হয়েছে। এই ২০টি গ্রেডের মধ্যে ১ম গ্রেডের মূলবেতন ৭৮০০০ টাকা কিন্তু ২০তম গ্রেডের মূলবেতন হলো ৮২৫০ টাকা। অথচ প্রজাতন্ত্রের ১ম থেকে ২০তম গ্রেডের সকলেই পরিবারের জন্য একই বাজার ব্যবস্থায় সাংসারিক প্রয়োজন মেটায়, তাহলে মূলবেতনের এতো ব্যবধান কেন?

গ্রেড থেকে গ্রেডের বৈষম্যমূলক ব্যবধান সৃষ্টির মাধ্যমে পে-স্কেল/২০১৫ কে আরও বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে। ১ম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেড পর্যন্ত গ্রেড থেকে গ্রেডের গড় ব্যবধান রয়েছে প্রায় ৬০০০ টাকার মতো, অথচ ১১তম থেকে ২০ তম গ্রেড পর্যন্ত গ্রেড থেকে গ্রেডের গড় ব্যবধান রয়েছে প্রায় ৪২০ টাকা মাত্র। এটা গল্পের হলুয়া রুটি ভাগ করার কাহিনি মাত্র।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ, সরকারি চাকুরিতে এজন্য ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার ১০টি বেতন গ্রেড প্রনয়ন করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালী শাহাদাত বরনের মধ্য দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের দুর্দশা সৃষ্টি হয়। যদি গ্রেড সংখ্যা কম থাকে, তাহলে পদোন্নতি বা গ্রেড উন্নতির মধ্য দিয়ে বৈষম্য অনেকাংশে নিরসন হয়।

ভাতা সংক্রান্তঃ
বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় সরকার প্রদত্ত মূল বেতনের উপর নির্ভর করে যে বাড়ীভাড়া দেয়, তার প্রায় দেড় গুন বাড়ীভাড়া গুনতে হচ্ছে কর্মচারীদের। হয়তো অল্প কিছু কর্মচারী নিজ বাড়ীতে থেকে চাকুরি করছেন, কিন্তু বেশীরভাগ কর্মচারী নিজ বাড়ী থেকে বহুদুরে থেকে চাকুরি করতে হচ্ছে। যারা নিজ ওয়ার্ড/ইউনিয়ন/উপজেলায় চাকুরি করছেন, তাদের বাড়ীভাড়া প্রয়োজন হয় না বিধায় বর্তমান বাজারের সাথে একটু হলেও তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন। কিন্তু যারা নিজ উপজেলার বাহিরে দূর-দূরান্তে চাকুরি করছেন, তাদের দুঃখের শেষ নেই।

পরিবারের কেউ অসুস্থ্য হলে বর্তমানে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিজিট হলো ১২০০/১৫০০ টাকা, এরপর রয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধ ক্রয়। মাসে ছয় সদস্যের পরিবারের কেউ অসুস্থ্য হয়েই থাকে, তাই নামমাত্র ১৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা দিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। তাছাড়া জীবিত বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য ডায়বেটিস, প্রেসার, কিডনিজনিত রোগের সবসময় ঔষধ প্রয়োজন হয়।
বর্তমান বাজারে দুইটি বিস্কুট ১০ টাকা, একটি কলা ৮-১২ টাকা ও এককাপ চা ১০ টাকা। অথচ সরকার টিফিনভাতা দেয় মাসে মাত্র ২০০ টাকা। কিন্তু ব্যাংক কর্মচারীদের দৈনিক লাঞ্চভাতা দেয় ২০০ টাকা। 

শিক্ষা সহায়কভাতা সন্তান প্রতি ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ দুই সন্তন)। অথচ বিদ্যালয়-কলেজের মাসিক বেতন, খাতা-কলম প্রভৃতিতে কম হলেও সন্তানপ্রতি ২০০০ টাকা খরচ হয়।

বর্তমান সময়ে যাতায়াতের সকল যানবাহনে ভাড়া বেড়েছে, অথচ সরকার মাসিক ৩০০ টাকা যাতায়াত ভাড়া হিসেবে দিচ্ছে (শুধুমাত্র সিটি কর্পোরেশন এলাকা)।
 
মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকার পরিচালনায় নিয়োজিতদের কাছে আকুল আকুতি, দয়া করে আমাদের মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি দিন। উপরিল্লেখিত বিষয়গুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে সৎভাবে বাঁচার মতো উদ্যোগ গ্রহন করুন।

"খান আতাউর রহমান এর ফেসবুক আইডি থেকে সংগৃহীত"

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!