• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

পিত্তথলিতে পাথর: উপসর্গ, কারণ ও প্রতিরোধ


স্বাস্থ্য ডেস্ক আগস্ট ১৫, ২০২৩, ০১:১৮ পিএম
পিত্তথলিতে পাথর: উপসর্গ, কারণ ও প্রতিরোধ

ঢাকা : মানুষের শরীরে গলব্লাডার হলো পিত্তথলি বা পিত্তকোষ। পরিপাকতন্ত্রের একটি নাশপাতি আকৃতির ফাঁপা অঙ্গ যা লিভারের ডান দিকে থাকে। পিত্তথলি থেকে নিঃসৃত পিত্তরস খাবার হজমে সাহায্য করে। রক্তে কোলেস্টেরল বাড়লে বা বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে পিত্তরস ক্ষরণে বাধা পরে। তখন সেই পিত্তরস পিত্তথলিতে জমে পাথর তৈরি করে।

বিভিন্ন বয়সের মানুষই এখন এই সমস্যায় ভুগছেন। পিত্তথলিতে পাথর হলে প্রথমে তা বোঝা যায় না। অনেকে সাধারণ পেট ব্যথা ভেবে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে নেয়। তাতে কিছুই কাজ দেয় না। উল্টে ভুগতে হয় রোগীকে। এই রোগের মূল উপসর্গ পেটে ব্যথা। নিয়মিত পেটে ব্যথাই জানান দেয় যে, পিত্তথলিতে পাথর জমেছে।

পিত্তথলিতে পাথরের প্রকারভেদ

পিত্তথলিতে সাধারণত দুই ধরনের পাথর হয়ে থাকে।

কোলেস্টেরল পিত্তথলি পাথর: এটা সবচেয়ে সাধারণ ধরনের পিত্তথলি পাথর। পিত্তথলিতে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে এ ধরনের পাথর হয়। এই পিত্তপাথরগুলি প্রধানত দ্রবীভূত কোলেস্টেরল দ্বারা গঠিত, তবে অন্যান্য উপাদান থাকতে পারে। এই পাথর হলুদ রঙের হয়ে থাকে।

পিগমেন্ট পিত্তথলি পাথর: পিত্তথলিতে যখন খুব বেশি বিলিরুবিন থাকে তখন এ ধরনের পিত্ত পাথর গঠন হয়। এই পিত্তপাথর গাঢ় বাদামী বা কালো রঙের হয়ে থাকে।

পিত্তথলিতে পাথর জমার কারণ :

১) টানা অনেকটা সময় খালি পেটে থাকলে গল ব্লাডারে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

২) ওজন বেড়ে গেলে পিত্তথলির উপর চাপ পড়ে। তার জেরেও অনেক সময় গল ব্লাডারে পাথর জমে।

৩) চল্লিশের পর এই রোগের আশঙ্কা বেশি। তাই চল্লিশের কাছাকাছি বয়স আসলে তখন থেকেই পানি খাওয়ার নিয়ম আরও কড়া হওয়া জরুরি।

৪) ডায়াবেটিস থাকলেও সতর্ক হতে হবে। কারণ এই রোগে আক্রান্তদের গল ব্লাডারে পাথর জমার আশঙ্কা বেশি।

৫) বংশে কারও এই রোগ থাকলেও সাবধান হওয়া ভাল। পারিবারিক ভাবেও এ রোগ এক জনের থেকে আর এক জনের শরীরে যায়।

৬) শরীরে বা পিত্তে কোলেস্টেরল বেশি বেড়ে গেলে গল ব্লাডারে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

৭) শরীরে অতিরিক্ত বিলিরুবিন ও অনেক সময় পিত্তথলিতে পাথর গঠনে অবদান রাখে।
পিত্তথলিতে পাথর জমার উপসর্গ

১) পিত্তাশয়ে পাথর হলে মাংস বা তেল-মশলাদার খাবার খেলেই পেটে তীব্র যন্ত্রণা হয়। সঙ্গে হয় বমিও।

২) মাঝেমাঝেই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে এবং সঙ্গে পেটে ব্যথা হয়।

৩) গল ব্লাডারে পাথর জমার মূল লক্ষণ পেটের ডান দিক থেকে ব্যথা শুরু হয়ে ডান কাঁধ পর্যন্ত পৌঁছনো। এ রকম হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।

৪) প্রস্রাবের রং দেখেও সতর্ক হওয়া যায়। গাঢ় খয়েরি রঙের প্রস্রাব হলে বুঝবেন, তা পিত্তথলিতে পাথর জমার ইঙ্গিত হতে পারে।

৫) গল ব্লাডারে পাথর জমলে অনেকেই জন্ডিসের মতো রোগে আক্রান্ত হন। জন্ডিস হলেও সতর্ক থাকতে হবে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

নিচের কোন লক্ষণ যদি প্রকটভাবে দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

১. পেটে তীব্র ব্যথা যে স্থিরভাবে বসে থাকা যাচ্ছে না এমন অবস্থা।

২. ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া অর্থাৎ জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিলে।

৩. ঠান্ডা লাগার সাথে প্রচন্ড জ্বর থাকলে

পিত্তথলিতে পাথর প্রতিরোধ : বেশি কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে পিত্তথলিতে পাথর এড়িয়ে চলা সম্ভব।

১. খাবার বাদ দিবেন না : প্রতিদিন আপনার স্বাভাবিক খাবারের সময় ধরে রাখার চেষ্টা করুন। খাবার বাদ দেওয়া বা দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকা যাবে না। এসব অভ্যাস পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

২. ধীরে ধীরে ওজন কমানো : আপনার যদি ওজন কমাতে হয় তবে তা ধীরে ধীরে কমান। দ্রুত ওজন হ্রাস পিত্তথলিতে পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সপ্তাহে ওজন ১ বা ২ পাউন্ড কমানোর লক্ষ্য রাখুন।

৩. ফাইবারযুক্ত খাবার খান : আপনার প্রতিদিনের খাবারে উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন, যেমন ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য। এসব খাবার পিত্ততে পাথর গঠনে বাঁধা দেয়।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা : স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজন পিত্তপাথরের ঝুঁকি বাড়ায়। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক জরুরি। স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে বডী মাস অনুযায়ী ওজন বজায় রাখা উচিত। তথ্যসূত্র: মায়োক্লিনিক এবং আনন্দবাজার

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!