ঢাকা: বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে হঠাৎ বৃষ্টিতে? মন খারাপ করবেন না, বরং ঘরেই আপনি বর্ষা বিলাসের নতুন পরিকল্পনা করে ফেলুন। ঘুমকাতুরে বাঙালি বৃষ্টি উদযাপন বলতে আরামের একটি ভাতঘুমকেই বেশি প্রাধান্য দেয় ঠিকই, কিন্তু আরও অনেক উপায় আছে একটি অলস বৃষ্টির দিন উপভোগ করার।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বৃষ্টির দিনে ঘরে বসেই সময় কাটানোর দশটি সেরা উপায়। যা মন ভালো করার পাশাপাশি জীবনের প্রতি ভালোবাসাও বাড়িয়ে দেবে।
১. এক কাপ গরম চা
প্রথমেই বলা যায়, এক কাপ গরম চা বা কফির কথা। নিজের প্রিয় এক কোণে বসে জানালার পাশে গরম পানীয় হাতে নিয়ে বৃষ্টির দৃশ্য উপভোগ করার আনন্দ সত্যিই অন্যরকম। সঙ্গে যদি থাকে প্রিয় বই বা গান, তাহলে মুহূর্তগুলো হয়ে ওঠে কবিতার মতোই কাব্যিক।
২. চিঠিতে স্মৃতি রোমন্থন
অনেকেই আজকাল হাতে লেখা চিঠি ভুলেই গেছেন। বৃষ্টির দিনে মনের আবেগ নিয়ে একটি চিঠি লেখা যেতে পারে কোনো পুরোনো বন্ধু, আত্মীয় বা প্রিয়জনকে। অথবা নিজের ডায়েরির পাতায় তুলে ধরতে পারেন আপনার ভাবনা, অনুভূতি ও স্বপ্নের ইচ্ছার কথা। এই চর্চা
বৃষ্টির দিনে ঘরে সময় কাটানোর সেরা উপায়
৩. গাছে-বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা
যাদের বাসার বারান্দায় ছোটখাটো টবের গাছ আছে, তারা এই সময়টাতে গাছের যত্ন নিতে পারেন। পুরোনো পাতা ছেঁটে দেওয়া, গাছপালা পরিষ্কার করা কিংবা নতুন করে কিছু গাছ লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে বৃষ্টির পানিও একটি প্রাকৃতিক সুবিধা হিসেবে কাজ করে।
৪. রঙতুলিতে মনের কথা
যারা আঁকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য বৃষ্টির দিন এক অসাধারণ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। জানালার পাশে বসে কাগজে তুলে আনুন বৃষ্টিভেজা প্রকৃতির চিত্র। এটি শুধু সৃজনশীলতাই নয়, মানসিক প্রশান্তিও এনে দেবে।
৫. পেটপুজো তো লাগবেই
রান্না করতেও ভালোবাসেন অনেকেই। বৃষ্টির দিনে পরিবারের জন্য কিছু বিশেষ খাবার রান্না করা যেতে পারে। খিচুড়ি আর গরুর মাংস, পিয়াজু, চিতই পিঠা কিংবা গরম স্যুপ এসব খাবার বৃষ্টির দিনে এক ভিন্ন স্বাদ এনে দেয়। রান্নার সঙ্গে পরিবারের অন্যদের অংশগ্রহণ দিনটিকে আরও আনন্দময় ও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
৬. ফেলে আসা দিনের গল্প
পুরোনো অ্যালবাম খুলে ছবি দেখা, সেই ছবিগুলোর গল্প শোনা বা শেয়ার করা – বৃষ্টির দিনে এক অসাধারণ কাজ হতে পারে। এটি যেমন স্মৃতিচারণ করে মন ভালো করে তোলে, তেমনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কও আরো গভীর করে।
৭. জাগিয়ে তুলুন লেখক সত্ত্বা
আবেগপ্রবণ মূহূর্তে অনেকে লেখালেখির দিকে ঝুঁকেন। বৃষ্টির দিনে আবেগ আর প্রকৃতির সংমিশ্রণে আপনার কলমও কথা বলবে। লিখে ফেলুন একটি ছোট গল্প কিংবা কবিতা। হয়তো আপনার লেখকসত্ত্বার উন্মেষ ঘটবে আজ থেকেই।
৮. শখের ক্রাফ্টিং
পুরোনো বোতল, কাগজ, কাপড় বা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে তৈরি করতে পারেন ঘর সাজানোর কিছু ভিন্নধর্মী জিনিসপত্র। ইউটিউব বা ফেসবুকে অসংখ্য সহজ টিউটোরিয়াল রয়েছে, সেগুলো অনুসরণ করে আপনার ঘরটিকে করে তুলুন আরও আকর্ষণীয়।
৯. সবাইকে জানান আপনার পছন্দের মুহূর্ত
প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের অনুভূতি তুলে ধরতে পারেন অডিও বা ভিডিও ব্লগে। বৃষ্টির দিনের গল্প, স্মৃতি বা ভাবনা নিয়ে রেকর্ড করুন একটি ভিডিও। বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন কিংবা ইউটিউবে প্রকাশ করুন। এটি হতে পারে আপনার অনলাইন অভিজ্ঞতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
সব মিলিয়ে বৃষ্টির দিন শুধু প্রকৃতির নয়, আমাদের ভেতরের সৃজনশীলতাকেও জাগিয়ে তোলে। তাই এই সময়টাকে একঘেয়েমি মনে না করে বরং নিজের মতো করে উপভোগ করুন। সময় কাটুক ভালো লাগায়, প্রশান্তিতে। আর কখনো কখনো নিঃশব্দে বসে শুধুই বৃষ্টির শব্দ শুনে মন হারিয়ে ফেলাটাও এক অনন্য জীবনানুভূতি।
ইউআর