• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ঢাকা-নেপিডো বৈঠক আজ


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ০৯:৩৫ এএম
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ঢাকা-নেপিডো বৈঠক আজ

ঢাকা: চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরীক্ষমূলক ও স্বল্প পরিসরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার। এ লক্ষ্যে আজ সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের রাজধানী শহর নেপিডোয় একটি বৈঠক হবে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেবেন।

বৈঠকে যোগ দিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনু বিভাগের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল এরই মধ্যে মিয়ানমার পৌঁছেছে। রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরানো ও নিরাপদ বোধ করাতে নেপিদো কী কী পদক্ষেপ নেবে– বৈঠকে সে বিষয়ে আলোচনায় জোর দেবে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাইলট প্রজেক্ট সফল করতে চলতি মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একাধিক বৈঠক হবে। এরই অংশ হিসেবে আজ নেপিডোয় বসছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। কিছুদিনের মধ্যে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে কক্সবাজার আসার কথা রয়েছে। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চীন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মূল প্রশ্ন হলো, তারা ফিরে যেতে নিরাপদ বোধ করছে কিনা। তারা যদি নিরাপদ বোধ না করে, তাহলে জোর করে ফেরত পাঠাবে না বাংলাদেশ। কারণ স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চায় ঢাকা।

ওই কর্মকর্তা জানান, প্রত্যাবাসনে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বেশ কিছু ঘর তৈরি করেছে মিয়ানমার সরকার। তবে সেগুলো দেখে এসে প্রত্যাবসনে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। এখন তাদের আস্থা অর্জনে নেপিদো থেকে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো– প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের এককালীন অর্থ দেওয়া হবে এবং ইচ্ছা করলে তারা নিজ গ্রামেও যেতে পারবে। মিয়ানমারের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ।

তবে শুরুতেই রোহিঙ্গারা তাদের গ্রামে যেতে পারবে না। মিয়ানমার সরকারের দেওয়া ঘরবাড়িতে তাদের তিন মাস থাকতে হবে। এর পর নিজ গ্রামে স্থানান্তর করা হবে। আর কেউ যদি সরকারি ঘরবাড়িতে থেকে যেতে চায়, সে ব্যবস্থাও করবে মিয়ানমার সরকার।

রোহিঙ্গাদের অন্যতম দাবি হলো– মিয়ানমারের নাগরিকত্ব অর্জন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, আশির দশকের শুরুতে মিয়ানমার তাদের নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন করে। তখন নাগরিকত্ব হারায় রোহিঙ্গারা। এখন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হলে ওই আইন পরিবর্তন করতে হবে। নেপিডো বলেছে, বিষয়টি তাদের বিবেচনাধীন।

প্রাথমিক প্রত্যাবাসনের জন্য তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গার একটি তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকার রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও মর্যাদার সঙ্গে একই এলাকায় একসঙ্গে থাকতে পারে এবং কেউ পরিবার থেকে আলাদা হয়ে না যায়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখছে বাংলাদেশ। তালিকাটির বিষয়ে মিয়ানমার সবুজ সংকেত দিলে সেখান থেকেই প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

কূটনীতিকরা বলছেন, চীন যেভাবে ইরান ও সৌদি আরবকে এক টেবিলে বসিয়ে তাদের দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে, ঠিক একই রকম সফলতা দেখাতে চায় দক্ষিণ এশিয়ায়। তাছাড়া, ইন্দো-প্যাসিফিকে পশ্চিমাদের চাপ যেভাবে বাড়ছে তাতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে পক্ষে রাখা ছাড়া বিকল্প নেই বেইজিংয়ের। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সফলতা দেখাতে চায় চীন।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!