ফাইল ছবি
ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাংলাদেশে বিজয় দিবস ঘিরে প্রস্তুতির আবহ তৈরি হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান ছিল রাষ্ট্রীয় উদযাপনের অন্যতম প্রধান আয়োজন। তবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সেই ঐতিহ্যবাহী আয়োজন থেকে সরে এল সরকার।
গত বছর পাঁচ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আট আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ক্ষমতা গ্রহণের চার মাসের মাথায় ওই সরকার নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ স্থগিতের ঘোষণা দেয়। এক বছর পর এ বছরও একই সিদ্ধান্ত বহাল থাকল।
গত ১৯ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, বিজয় দিবস ঘিরে কোনো অস্থিরতার আশঙ্কা নেই এবং আগের তুলনায় কর্মসূচি আরও বিস্তৃত হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এবারও প্যারেড বা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না। শুধু রাজধানী নয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও কুচকাওয়াজ না হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেবল একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়, এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতা ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই রেওয়াজ বন্ধ থাকায় রাষ্ট্রীয় উদযাপনের চেহারায় একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদের মতে, কুচকাওয়াজ না হওয়ার পেছনে শুধু নিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক বিব্রতবোধও একটি কারণ হতে পারে। তার ভাষায়, কুচকাওয়াজ হলে প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী সামরিক বাহিনীকে রাষ্ট্রপতিকে সালাম জানাতে হয়। বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে, বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচি থাকলেও কুচকাওয়াজের অনুপস্থিতি রাষ্ট্রীয় উদযাপনে এক ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। নিরাপত্তা বিবেচনা, রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ঐতিহাসিক রেওয়াজ-এই তিনের টানাপোড়েনেই এবারও বিজয়ের সকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড থাকছে নীরব।
এসএইচ







































