• ঢাকা
  • রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ইসির সঙ্গে টানাপোড়েন, শাপলা ছাড়া প্রতীক নেবে না এনসিপি


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
ইসির সঙ্গে টানাপোড়েন, শাপলা ছাড়া প্রতীক নেবে না এনসিপি

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে প্রতীক ইস্যুতে দলটি ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। শাপলা প্রতীক না পেলে ইসির তালিকাভুক্ত অন্য কোনো প্রতীক নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে দলটি।

দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শাপলা প্রতীক না পেলে তারা নির্বাচনেও অংশ নেবে না। এমনকি কমিশনের সঙ্গে ভবিষ্যতে কোনো যোগাযোগ রাখতেও তারা অনাগ্রহী।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “ইসি যদি শাপলা প্রতীক না দিয়ে স্বেচ্ছাচারী আচরণ করে, তাহলে এই কমিশনের যে কোনো কার্যক্রমে আমাদের অনাস্থা থাকবে।”

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নতুন গেজেটে শাপলা প্রতীক নেই। তাই এনসিপিকে এই প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।

সোমবার দেশের কিছু গণমাধ্যমে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া হতে পারে এমন খবর প্রকাশিত হলেও নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “নতুন প্রতীক তালিকায় শাপলা নেই, তাই এনসিপির সেই প্রতীক পাওয়ার সুযোগ খুবই কম।”

গত সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ১১৫টি প্রতীক রেখে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে শাপলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এনসিপি যদি শেষ পর্যন্ত গেজেটভুক্ত ৫০টি প্রতীকের কোনোটি নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তাদের নিবন্ধন ঝুলে যেতে পারে।

নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় শাপলা, কলম ও মোবাইল—এই তিনটি প্রতীক চেয়েছিল এনসিপি। পরে সংশোধিত চিঠিতে শাপলা, লাল শাপলা অথবা সাদা শাপলার মধ্যে যেকোনো একটি প্রতীক দেওয়ার অনুরোধ জানায় দলটি।

গত কয়েক মাস ধরে দলটির নেতাকর্মীরা শাপলা প্রতীকের দাবিতে প্রচার চালাচ্ছেন। ইসির সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে তারা।

ইসির চিঠি অনুযায়ী, ৭ অক্টোবরের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৫০টি প্রতীক থেকে পছন্দের একটি বেছে নিতে বলা হয় এনসিপিকে। তবে তারা ইসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক তারা গ্রহণ করবে না।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে শাপলা প্রতীকের সাতটি নমুনা যুক্ত করে পাঠানো হয়।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, “আমাদের কোনো আইনগত জটিলতা নেই। তাই আমরা শাপলার ক্ষেত্রেই অনড় রয়েছি।”

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এনসিপির আগে নাগরিক ঐক্যও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল। নাগরিক ঐক্যকে কেটলি প্রতীক দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তারা প্রতীক পরিবর্তনের আবেদন করে। বিতর্ক এড়াতেই গেজেটে শাপলা প্রতীক বাদ রাখা হয়েছে।

এনসিপি নেতারা বলছেন, শাপলা প্রতীক না দেওয়ার পেছনে একটি গোয়েন্দা সংস্থার আপত্তি রয়েছে। তাদের দাবি, ইসি চাইলেও স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “ইসি কোনো অদৃশ্য চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ভালো বার্তা নয়।”

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা না গেলে এনসিপির নিবন্ধন ঝুলে যেতে পারে।

ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী বলেন, “যদি এনসিপি গেজেটভুক্ত কোনো প্রতীক নিতে না চায়, তবে নিবন্ধন ঝুলে থাকবে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে আদালতে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে তাদের।”

শাপলা প্রতীক নিয়ে অচলাবস্থার কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এনসিপি। এখন দেখা যাচ্ছে, কমিশনের সিদ্ধান্ত না বদলালে দলটির নিবন্ধনই অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। তথ্যসূত্র: বিসিসি বাংলা

এসএইচ
 

Wordbridge School
Link copied!