ফাইল ছবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে জটিল সমীকরণ। বিএনপি–বলয় থেকে দূরে সরে সমান্তরাল জোট গঠনের পথে এগোচ্ছে জামায়াতসহ ইসলামি আট দল। তাদের আলোচনার টেবিলে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। এখনও সমঝোতার দরজা খোলা রেখে দুই দিকেই যোগাযোগ রাখছে দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলছেন, অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি সম্মান রেখেই তারা সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, এনসিপিকে আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আলোচনা চলছে। তবে আলোচনা মানেই প্রার্থী হওয়ার নিশ্চয়তা নয়। শীর্ষ নেতৃত্বকে ছাড় দেওয়া হতে পারে, কিন্তু আসন বণ্টন সংখ্যার ওপর নির্ভর করবে না।
অন্যদিকে এনসিপিও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট রেখে বলছে, জুলাই সনদকে সামনে রেখে তারা আলোচনায় আছে। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মাহবুব আলম জানান, যারা জুলাই সনদের সঙ্গে মতাদর্শে মিল রাখছে, তাদের সঙ্গেই আলোচনার পথ খোলা। সমঝোতা হবে কি না, কয়েকদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে বলে তিনি জানান।
তবে দলটির ভেতরের অনেকে জানাচ্ছেন, বিএনপির সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করার পর বিদ্রোহী প্রার্থীদের আচরণ এনসিপিকে আরও সন্দিহান করেছে। তারা মনে করছে, বিএনপির সঙ্গে গেলে মনোনয়ন নিয়ে দলে ভাঙন বা সংঘাতের ঝুঁকি থাকে। বিপরীতে জামায়াতের সঙ্গে গেলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কম, পাশাপাশি নির্বাচনি মাঠে তাদের সংগঠন ও মানবসম্পদের সুবিধা পাওয়া যাবে।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় অনেকেই আমাদের দিকে আসছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা বা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থানে থাকা যে কেউ আলোচনায় এলে বিবেচনায় থাকবে। তবে শুধু আসন চাওয়ার উদ্দেশ্যে কেউ এলে তা ইতিবাচকভাবে নেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, বিএনপির শরিকদের অনেকেই হতাশ হয়ে বেরিয়ে আসছে এবং তাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। এনসিপির সঙ্গে কথাবার্তাও এখনো চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগ মুহূর্তে।
জামায়াতের একজন নির্বাহী পরিষদ সদস্য বলেন, এবি পার্টি ও নুরুল হক নুরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ছোট দলগুলোকে আরও সতর্ক করেছে। তারা বুঝে গেছে, কোথায় নিরাপদ। জামায়াতের শক্তিশালী মাঠ-সংগঠনকে কাজে লাগাতে পারবে-এ বিশ্বাস থেকেই অনেকের ঝোঁক এখন জামায়াতপন্থী জোটের দিকে।
এনসিপির লক্ষ্য এখন দ্বিমুখী-স্বতন্ত্র রাজনীতি বজায় রেখে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা, আবার অন্যদিকে কার্যকর জোটের সঙ্গেও সমঝোতার চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত কোন পথে হাঁটবে দলটি-তার উত্তর মিলবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ঘনিয়ে এলে।
এসএইচ







































