• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

জানুয়ারিতে ভোট

চট্টগ্রাম সিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহেই


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৪, ২০২০, ০৯:৩৯ পিএম
চট্টগ্রাম সিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহেই

ঢাকা : আগামী জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। গত ২৯ মার্চ ভোট হওয়ার কথা থাকলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ঘোষিত এ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সিটির কার্যক্রম বর্তমানে চলছে প্রশাসক দিয়ে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদপূর্ণ হবে।

ইসির তথ্যমতে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ১ মার্চ মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়। ৮ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল। ৯ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণের কথা ছিল।

এর মধ্যে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ১২ দিন ধরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার পর করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১ মার্চ ভোটগ্রহণ স্থগিতের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় গত ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষে বিদায় নেন চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং ৪১ জন সাধারণ ওয়ার্ডের ও ১৪ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

এর আগেই অবশ্য সরকার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে চসিকের প্রশাসক হিসেবে ১৮০ দিনের জন্য দায়িত্ব দেন। ৬ আগস্ট সুজন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। আগামী ৫ ফেব্রুরিতে চসিক প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।  

এর মধ্যে শুরু হয়েছে চসিক সিটির ভোটের কার্যক্রম। বর্তমানে পৌরসভা নির্বাচন চলছে। আগামী সপ্তাহে আরও ৬০টি পৌরসভার তফষিল ঘোষণা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানান।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চায়, মেয়াদোত্তীর্ণের আগে নির্বাচন শেষ করে নির্বাচিত জন-প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের। এর জন্য ভোটগ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ, গেজেট জারি থেকে নির্বাচিতদের শপথ অনুষ্ঠান পর্যন্ত প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে চসিক সিটির ভোট সম্পন্নে ইসির প্রতি তাগিদ রয়েছে।

এই জন্য সিটি ভোটের পুরো কার্যক্রম সম্পন্নের এখতিয়ার ইসির উপরে ছেড়ে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কমিশন যেকোন দিন বসে ভোটের তারিখ জানিয়ে দিলে নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ শুরু হবে যাবে।

আগামী সপ্তাহে কমিশন সভায় বসে চসিক সিটির ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা দেবেন বলে ইসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর ভোটের তারিখ হলে নির্বাচন সম্পন্নের পুরো প্রস্তুতি রয়ছে ইসির।

এদিকে, ভোটে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা দ্রুত ভোটের তারিখ চেয়ে ইসিকে অনুরোধ জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত ময়র প্রার্থী  এম রেজাউল করিম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম সিটির প্রশাসকের মেয়াদ আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

আমরা কমিশনকে ভোট আয়োজনের পুরো এখতিয়ার দিয়ে দিয়েছি, তারা সুবিধাজনক সময়ের মধ্যে ভোটের তারিখ ফেলে নির্বাচনটি সম্পন্ন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। কারণ আমরা চাই, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জন-প্রতিনিধি সিটির দায়িত্ব পালন করুক।

সিনিয়র সচিব আরও বলেন, নির্বাচিত জন-প্রতিনিধিদের ভোটগ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ এবং গেজেট জারি থেকে শপথ পর্যন্ত একটা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। এর জন্য সময় প্রয়োজন হয়। সে জন্য কমিশনের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এ নির্বাচনটি সম্পন্নের।

চট্টগ্রাম সিটির আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো, হাসানুজ্জামান জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যে সময়সীমার মধ্যে চসিক সিটির নির্বাচনের কথা বলছে, ওই সময়ের মধ্যে হলে আমাদেরও সুবিধা হয়। এতে ভোট পরবর্তী কার্যক্রম শেষে নির্বাচিত জন-প্রতিনিধিদের কাছে সব প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করে ক্ষমতা হস্তান্তর সহজ হবে। তবে, সব কিছুর উর্দ্ধে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, চসিক সিটি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। আলোচনা হলে কবে নির্বাচন করা যাবে তা আপনারা জানতে পারবেন।

তবে, নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, চট্টগ্রাম সিটির বিষয়ে কমিশনের একটা প্রাথমিক প্রস্তুতি রয়েছে। সেখানে বর্তমান প্রশাসকের মেয়াদের  মধ্যে ভোটটি সম্পন্ন হবে।  

আশা করছি,  আগামী সপ্তাহে কমিশন সভা হওয়ার কথা রয়েছে, সেখান থেকে ভোটের তারিখটি আপনারা জানতে পারবেন। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় তফসিল যা আছে বহাল থাকবে, শুধু ভোটের তারিখটি নির্ধারন হবে বলে জানান প্রশাসন সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এদিকে, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর প্রথম সভা হয় একই বছরের ৬ আগস্ট। এ সিটির মেয়াদোত্তীণের তারিখ ছিল ৫ আগস্ট’২০, যা গত হয়েছে।

এ সিটির মোট ওর্য়াড ৪১টি, সংরক্ষিত ওর্য়াড ১৪টি, মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ০২ হাজার ৮১১ জন, সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ৭২১টি এবং কক্ষ ৫,১৪২টি। নির্বাচন বিধির বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হয়; স্থগিত হওয়ায় জানুয়ারিতে ভোট হবে। এর মধ্যে দিয়ে চসিক নতুন মেয়ার ও কাউন্সিলররা দায়িত্ব পাবে।

নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের জন্য এবার নির্বাচন পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জন্য আলাদা বাজেট থাকবে। এই বাজেট এখনো ঠিক করেনি কমিশন। নতুন ভোটের তারিখ হলে পরিচালনাখাতের খরচ নির্ধারণ হবে। তবে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে পরিচালনা বরাদ্দ থেকে প্রায় কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান চসিক সিটির রিটানিং কর্মকর্তা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!