• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাইগারদের জন্য শুধুই ‘দুঃসংবাদ’


ক্রীড়া ডেস্ক জানুয়ারি ১৭, ২০১৭, ০২:০৬ পিএম
টাইগারদের জন্য শুধুই ‘দুঃসংবাদ’

ঢাকা : অ্যাম্বুলেন্সে স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগছিল মুশফিকুর রহিমের। বাউন্সারের আঘাতে মাথা তখনো টনটন করছে। বেসিন রিজার্ভ থেকে ওয়েলিংটন হাসপাতালে যাওয়ার পথে মেডিকেল অ্যাটেনড্যান্ট রক্তচাপ মাপলেন। স্বাভাবিক। নামের বানান জিজ্ঞেস করলেন। সঙ্গে আরও টুকটাক কথা। মুশফিক সবকিছুতেই স্বাভাবিকভাবে সাড়া দিচ্ছিলেন।

হাসপাতালে গিয়ে আরেকটু স্বাভাবিক হলেন। এক্স-রেতে গুরুতর কিছু ধরা পড়ল না। এটা শুনেই মাঠে ফেরার জন্য ছটফট করতে লাগলেন। দ্রুত মাঠে ফিরে আবার ব্যাটিংয়ে নামতে চান। কিন্তু চিকিৎসকেরা কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দিলেন। হাসপাতাল থেকে ফিরে আবার মাঠে নামার তো প্রশ্নই ওঠে না, ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু ক্রাইস্টচার্চের দ্বিতীয় টেস্টেও মুশফিককে খেলতে বারণ করে দিয়েছেন তাঁরা।

মাথায় এমন আঘাত পেলে তাৎক্ষণিক কোনো সমস্যা হয় না। তবে নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসকেরা এই ক্ষেত্রে অন্তত একমাস খেলাধুলা না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মুশফিকের জন্যও ওয়েলিংটন হাসপাতাল থেকে সে পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ দলের ইংলিশ ফিজিও ডিন কনওয়ের এমন বক্তব্য, ‘এসব ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসকেরা অন্তত তিন থেকে চার সপ্তাহ না খেলার কথা বলেন। ইংল্যান্ডেও দুই থেকে তিন সপ্তাহের আগে মাঠে না নামার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেদিক দিয়ে ক্রাইস্টচার্চে মুশফিকের খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মাঠে ফিরতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’ 

ফিজিওর আশা, হায়দ্রাবাদে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ফিরতে পারবেন মুশফিক।

তার আগে অবশ্য ওয়েলিংটন টেস্টেই পাওয়া মুশফিকের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলের চোটও পুরোপুরি সারতে হবে। এ মুহূর্তে সেটাকেই বড় সমস্যা মনে করছেন ফিজিও, ‘ওর আঙুলের অবস্থাই বেশি খারাপ। সূক্ষ্ম যে চিড় ধরা পড়েছে, সেটা নতুন। এই চোট সারার জন্য আরও সময় দিতে হবে।’

এর আগে টিম সাউদির একটি শর্ট বাউন্সার বলে হেলমেটের পেছনে লেগে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন মুশফিকুর রহিম। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও পরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার সময় মুশফিকের সঙ্গে থাকা তামিম ইকবাল জানিয়েছেন, বিপদের কিছু নেই।

দ্বিতীয় ইনিংসে ইমরুল কায়েসের আহতের পর আহত শিবিরে মুশফিক। এ দিনে বাংলাদেশ ইনিংসের ৪২.৫ ওভারে টিম সাউদির ১৩৫ কিলোমিটার গতির একটি বলে বুঝে উঠতে না পারায় হেলমেটের পেছনে লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েক মিনিটের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাঠ থেকে ৩০০ মিটার দূরে ওয়েলিংটন হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মুশফিক চলতি সফরেই শুরুর দিকে ইনজুরির কারণে সীমিত ওভারের বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। পরে টেস্টে নামলেও আঙ্গুলে আবারও চোট পান। তাই ব্যাটিং ছাড়া উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় তাকে আর দেখা যায়নি। তবুও বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

এদিকে ইমরুলের আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাটা তাঁরা ক্রাইস্টচার্চে গিয়েই করবেন বলে জানিয়েছেন কনওয়ে। মুশফিকের মতো দ্বিতীয় টেস্টে ইমরুলের খেলায়ও কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলেন তিনি, ‘এখন যে রকম অবস্থা, এটা থাকলে ক্রাইস্টচার্চে ইমরুলের খেলাও অনিশ্চিত। তবে ও নিজে যদি ভালো বোধ করে, তাহলে খেলতে অসুবিধা নেই। এটা পুরোপুরি ইমরুলের ওপর নির্ভর করছে।’

একের পর এক চোটে জর্জরিত বাংলাদেশ দলে এখন সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষ ডিন কনওয়ে। এই মুশফিককে দেখতে হচ্ছে তো ওই ছুটে যেতে হচ্ছে ইমরুলের কাছে। পুরোনো ‘রোগী’ মোস্তাফিজুর রহমান তো আছেনই। নেটে বোলিং করলেই কোমরের ব্যথা জেগে উঠছে বাঁহাতি এই পেসারের। সর্বশেষ অবস্থা বুঝতে কাল কোমরের স্ক্যান করানো হয়েছে। কিন্তু মুশফিক, ইমরুলকে নিয়ে ব্যস্ততায় স্ক্যান রিপোর্ট দেখার সময় হয়নি ফিজিওর। ইমরুলের আলট্রাসাউন্ডের মতো এটাও ‘পেন্ডিং’ রাখা হয়েছে ক্রাইস্টচার্চের জন্য। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডে অসাধারণ এক টেস্টে অবিশ্বাস্য হারের পর বাংলাদেশের জন্য এখন কেবল দুসংবাদই আসছে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!