• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাসেল ঝড়ে মাশরাফির রংপুরকে হারিয়ে ফাইনালে সাকিবের ঢাকা


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯, ১০:১৮ পিএম
রাসেল ঝড়ে মাশরাফির রংপুরকে হারিয়ে ফাইনালে সাকিবের ঢাকা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: নাজমুল ইসলামের ওভারে পরপর তিন ছক্কা মেরে ম্যাচই শেষ করে দিলেন আন্দ্রে রাসেল। সবার জানা যে ছক্কা মারতে থাকলে রাসেলকে থামানো কঠিন। এদিন নাজমুলও পারেননি। আর সে কারণেই রংপুর রাইডার্সের ১৪২ রান ঢাকা ডায়নামাইটসের জয়ে কোনো বাধা হতে পারেনি। সাকিব আল হাসানের দর ২০ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ঢাকাকে শুরুতেই ধাক্কা দিয়েছিলেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। নাহিদুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লঙ্কান এই ওপেনার। অবশ্য শুরুর চাপ আর ধরে রাখতে পারেনি রংপুর। ৪১ রানে আউট হন সুনিল নারিন (১৪)। কিন্তু ততক্ষণে ৩.৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে উঠে গেছে ৪১ রান। এরপর সাকিব আর রনি তালুকদার মিলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। আক্রমণাত্মক সাকিবকে ফিরিয়েছেন বেনি হাওয়েল। ২০ বলে ২৩ করেছেন ঢাকার অধিনায়ক।

এরপর কাইরণ পোলার্ড (১৪) ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার আগেই তাঁকে মোহাম্মদ মিঠুনের ক্যাচে পরিণত করেন মাশরাফি। খানিকবাদে নুরুল হাসানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন রনি তালুকদার (৩৫)। এই সময়ই কিছুটা চাপে পড়ে ঢাকা। তবে লম্বা ব্যাটিং লাইনপে তখনও ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। তিনি এসে একটু দেখে খেলে মারতে শুরু করেন। শেষ অবধি রাসেলকে আর থামানো যায়নি। ১৯ বলে ৪০ রান করে ঢাকার জয় নিয়ে তবেই তিনি মাঠ ছেড়েছেন। একটিও বাউন্ডারি মারেননি রাসেল তবে ছক্কা মেরেছেন পাঁচটি। ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি।

বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি)  টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতেই ১৪২ রানে অলআউট হয় রংপুর রাইডার্স।

গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে কুমিল্লাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে রংপুর রাইডার্সকে দাপুটে জয় এনে দিয়েই দেশে ফিরে গেছেন দুই মারকুটে ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স হেলস ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ফলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ক্রিস গেইলের ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে নাদিফ চোধুরীকে মাঠে নামিয়ে সবাইকে চমকে দেয় রংপুর। অবশ্য বাজিতে হারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলটি।

 গেইল ১৫ রান করে আউট হলেও মাত্র ১২ বলে ২টি চার আর ৩টি ছক্কায় ২৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে শুভাগত হোমের বলে পোলার্ডের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন নাদিফ। আউট হওয়ার আগেই শুভাগতকে টানা তিন বলে তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
 
চলতি বিপিএলে প্রথমবার খেলতে নেমেই ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন নাদিফ চোধুরী। নিজের খেলা প্রথম ৫ বলে করেন ৫ রান। এরপর বল আর মাটিতে পড়তে দেননি জাতীয় দলে ‘সাবেক’ হয়ে যাওয়া মানিকগঞ্জের এই অলরাউন্ডার।

ঠিক পরের ওভারে রুবেল হোসেনের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন ক্রিস গেইল। ঠিক পরের বলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হন রাইলি রুশো।  দুর্দান্ত খেলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করা রুশো ফেরেন শূন্য রানে।

দলীয় ৪২ রানে পরপর তিন বলে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া রংপুরের হাল ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন ও রবি বোপারা। চতুর্থ উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এজন্য তারা ৫৪ বল মোকাবেলা করেন । মিথুন-বোপারায় জমে যাওয়া জুটিতে ভাঙ্গন ধরিয়ে ঢাকাকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁহাতি পেসার কাজি অনিক। ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৭ বলে ৩৮ রান করেন ফিরেন মিঠুন।

মিঠুনের বিদায়ের পর রংপুরের ব্যাটিং লাইন তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে। দলীয় ১০৬ রানে চতুর্থ উইকেট হিসাবে মিঠুনের বিদায় নেওয়ার পর সেখান থেকে ১২৮ রানে নবম উইকেট হারায় রংপুর। এসময় ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল ৩, অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা শূন্য, নাহিদুল ইসলাম ৪, ফরহাদ রেজা ২, শফিউল ইসলাম শুন্য রানে ফেরেন। ফলে রংপুরের সম্মানজনক স্কোর গড়ার আশাও শেষ হয়ে যায়।

তবে শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে ১টি ছক্কা ও দুটি চারে রংপুরকে দেড়শ’রানের কোটা পেরিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখান বোপারা। কিন্তু ওই ওভারের চতুর্থ বলে বোপারাকে থামিয়ে দেন ঢাকার সফল বোলার রুবেল। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৩ বলে ৪৯ রান করেন বোপারা।  রুবেল ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারে তৃতীয়স্থানে উঠে এলেন রুবেল। সেই সঙ্গে জিতে নিলেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও।  

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!