• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে দিল্লির সহিংসতা নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৭:০২ পিএম
অবশেষে দিল্লির সহিংসতা নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন অতুলনীয় ব্যক্তি।  ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তুমুল উত্তেজনার মধ্যে তিনি এই কথা বললেন।  দিল্লির সহিংসতা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুইদিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফেরার আগে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমি বলতে পারি, নরেন্দ্র মোদি একজন অসম্ভব রকম ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী মানুষ। তিনি এ স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। মোদি এমন কথাই আমাকে বলেছেন।

তিনি বলেন, আগে কী হয়েছে জানি না, তবে এখন এ বিষয়টি নিয়ে ভারত সচেতন। তার ওপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। আর যে সহিংসতা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমি শুনেছি। তবে সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

এদিকে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টা। উত্তর-পূর্ব দিল্লির যমুনা বিহারে শাহিদ সিদ্দিকির বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল উত্তেজিত জনতা। দোতলা বাড়ির একতলায় জামাকাপড়ের দোকান। প্রথমে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। তারপর শাহিদের গ্যারাজে আগুন লাগায় জনতা। স্লোগান দেয় ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’। 

দোতলায় নিজের পরিবার, দু’মাসের সন্তানকে নিয়ে ভয়ে থরথর করে কাঁপছেন শাহিদ। এসময় ঘটনাস্থলে হাজির হন বিজেপির স্থানীয় পুরপিতা প্রমোদ গুপ্ত। তিনিই বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়ান, শাহিদের বাড়িতে আগুন লাগানো যাবে না। শাহিদরা প্রমোদের দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাদের কোনও ক্ষতি হতে দেননি প্রমোদ। অবশ্য শাহিদের মতো সৌভাগ্য হয়নি সবার। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল চার। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত শেষে ১৯-এ দাঁড়িয়েছে। আহত ১৫০-এর বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের মধ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল, তা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবার রাতে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, কারওয়াল নগরে সান্ধ্য আইন (কারফিউ) জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েনের দাবি উঠেছিল। 

তবে প্রশাসন জানিয়েছে, যথেষ্ট সিআরপি নামানো হয়েছে। এখনই সেনা ডাকার দরকার নেই। এছাড়া পরিস্থিতি সামলাতে গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে আগামী এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। দিল্লি-সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদেও ১৪৪ ধারা জারি হয়। নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয় গাজিয়াবাদ-দিল্লির সীমানায় যাতায়াতের ওপর। টানা বন্ধ দু’দিন উত্তর-পূর্ব দিল্লির পাঁচটি মেট্রোস্টেশন।

উত্তর-পূর্ব দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালে গুরুতর আহতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে মৃত্যুও বাড়ার আশঙ্কা। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহতদের প্রায় অর্ধেক গুলিবিদ্ধ। সোমবার দিল্লি পুলিশের কনস্টেবল রতন লালের মৃত্যু হয়। প্রথমে জানা গিয়েছিল, মাথায় পাথরের চোট লেগে মার যান রতন। ময়নাতদন্তে জানা গেল, তার বাম কাঁধ দিয়ে গুলি ঢোকে। ডান কাঁধ থেকে সেই গুলি উদ্ধার হয়েছে।

ডিসি (শাহদরা) অমিত শর্মাও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি। হিংস্র জনতা তার ওপরে লাঠি নিয়ে চড়াও হয়েছিল। তার মাথার খুলিতে চোট লেগেছে। পুলিশ বাহিনীর অন্তত ৫০ জন আহত। ছাড় পাননি সাংবাদিকরাও।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!