• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঊর্ধ্বমুখী নির্মাণ সামগ্রীর দাম


দ্বীন ইসলাম আরিয়ান জানুয়ারি ২৩, ২০১৮, ০৩:৫৬ পিএম
ঊর্ধ্বমুখী নির্মাণ সামগ্রীর দাম

ঢাকা : দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রডের দাম টনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ইট ও বালু কিনতে হচ্ছে আগের বছরের চেয়ে এক-দেড় হাজার টাকা বেশি দামে। এসব সামগ্রীর দাম বাড়ায় দেশে নির্মাণ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশি ইস্পাতশিল্প মালিকরা এ দফায়ও দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশ্ববাজারে রডের কাঁচামাল বিলেটের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। যদিও একই অজুহাতে গত অক্টোবরে একদফা দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তখন ওই দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক বলে দাবি করেছিলেন নির্মাণশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, বিশ্ববাজারের কাঁচামালের সঙ্গে দাম সমন্বয় করলে রডের দাম টনে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজ (বাসি) বলছে, দীর্ঘদিন থেকে রড উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে রডের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে চলেছে। বাসির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এমএস রডের প্রধান উপাদান বিলেট দেশেই তৈরি হয়। খুব কম পরিমাণ বিলেটই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বিশ্ববাজারে বিলেটের দামের সঙ্গে সমন্বয়ের কারণে রডের দাম সর্বোচ্চ এক-দুই শতাংশ বাড়তে পারে। টনে ৫ হাজার টাকা বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

রাজধানীর নয়াবাজারে গতকাল ঘুরে দেখা গেছে বিএসআরএম, কেএসআরএম, আবুল খায়ের ব্র্যান্ডের (৬০-৭৫ গ্রেড) রড প্রতিটন বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬১ হাজার টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ৫৫ থেকে ৫৬ হাজার টাকা ছিল। এ ছাড়া ৪০ গ্রেডের রড ৫১ হাজার থেকে বেড়ে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সনাতনী (ম্যানুয়েল) কারখানায় উৎপাদিত রডের দাম ৫২ হাজার টাকা, যা আগে ৪৭ হাজার টাকায় পাওয়া যেত।

খায়ের অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী খায়েরউদ্দিন বলেন, রডের বাড়তি দামের কারণে ভরা মৌসুমে ব্যবসা মন্দা চলছে। প্রতিবছরই এই সময় রডের দাম বাড়ায় কোম্পানিগুলো। এটা নিয়ম হয়ে গেছে। আর বাজার স্থিতিশীল না থাকলে ক্রেতারা মৌসুমেও রড কম কেনেন। দাম কমার জন্য অপেক্ষা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে তৃতীয় দফায় দেশে বেড়েছে রডের দাম। প্রথমে গত জুনে বাজেট ঘোষণার পরপরই রডের দাম এক দফা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, চলতি অর্থবছর থেকে রডের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন পিছিয়ে যাওয়ায় সেটি আরোপ হয়নি। তবে তখন আর রডের দাম কমেনি। উল্টো গত অক্টোবরে এসে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে আবারো রডের দাম বাড়ানো হয়।

বারবার রডের এ দাম বৃদ্ধির প্রমাণও মেলে রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির প্রতিবেদনে। তাদের বাজারদর হিসেবে গত বছর একই সময় প্রতিটন ৬০ গ্রেডের রডের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা, যা এক বছরের ব্যবধানে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া ৪০ গ্রেডের রড ৪০ থেকে সাড়ে ৪২ হাজার টাকার মধ্যে ছিল। এখন ওই রডের দাম ২৩ শতাংশ বেশি।

এদিকে দেশের বিভিন্ন ইটভাঁটায় প্রতিহাজার ভালো মানের (১নং) ইটের দাম ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর এক থেকে দেড় হাজার টাকা কম ছিল। একইভাবে বালির দামও বেড়েছে গাড়িপ্রতি হাজার টাকার ওপর। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পরিবহন খরচসহ প্রতিট্রাক (৫ টন) সিলেট বালি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া আস্তর বালি বিভিন্ন স্থানে পরিবহন খরচসহ প্রতিট্রাক ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।

কয়লার মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূলত ইটের দাম চড়া বলে জানান বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আসাদুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত বছর প্রতিটন কয়লা ৮ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু এবার গুনতে হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা।

তবে তার দাবি, ভাঁটা থেকে দাম বাড়ানো হয়নি। এবার তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে অনেক ভাঁটায় ইট কম হয়েছে। এ কারণে বাজারে ইটের সরবরাহ কম। কিছু ইট বিক্রেতা ইট মজুদ করে তা বেশি দামে বিক্রি করছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!