• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোন দেশের ভ্যাকসিন নেবে বাংলাদেশ?


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৫, ২০২০, ০৭:৩৫ পিএম
কোন দেশের ভ্যাকসিন নেবে বাংলাদেশ?

ঢাকা: সারাবিশ্বে এখন ভ্যাকসিন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। সবার আগে ভ্যাকসিন নাকি নিরাপদ ভ্যাকসিন এই নিয়েও চলছে বিতর্ক। ইতিমধ্যে রাশিয়া কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে বলে দাবি করছে এবং এই ভ্যাকসিন তাঁদের দেশের নাগরিকদের মধ্যে দেওয়ার কার্যক্রমও তারা শুরু করেছে। যদিও কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছে যে, শুধুমাত্র বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার কারণে তাড়াহুড়ো করে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।

এই ভ্যাকসিনের যে তৃতীয় ট্রায়াল, সেই তৃতীয় ট্রায়াল এখনো সম্পন্ন হয়নি। আবার কোন কোন দেশ রাশিয়ার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ অতীতের কথা স্মরণ করে বলছেন যে, তাঁদের পক্ষে এরকম ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব। এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হবে বা কতটুকু করোনা প্রতিরোধ করতে পারবে তা দেখার অপেক্ষায় আছে। কোন কোন দেশ অবশ্য এই অপেক্ষা না করেই রাশিয়ার ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে এবং যোগাযোগও করেছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, অন্তত ২০ টি দেশ রাশিয়ার ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করেছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ভ্যাকসিনের জন্যে আবেদন করেনি।

অন্যদিকে চীন বলছে যে তাঁরা খুব শীঘ্রই ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে আসছে এবং চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষ ধাপে রয়েছে বলে তাঁরা দাবি করছে। চীনের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং মান নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু কেউ কেউ আবার মনে করছে যে, এখন চীনকে উপেক্ষা করা ঠিক হবেনা, কারণ চীন বিজ্ঞান গবেষণায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কাজেই তাঁদের ভ্যাকসিন যে একেবারেই মানসম্মত হবেনা এমন ভাবার কোন কারণ নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে, বৈজ্ঞানিক যে ধাপগুলো রয়েছে সেই ধাপগুলো অনুসরণ করেই চীনা ভ্যাকসিন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ এই ভ্যাকসিন কতটুকু নিরাপদ হবে বা কতটুকু বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণালব্ধ হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে। তবে এই দুটি ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক-সংশয় থাকলেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন নিয়ে তেমন কোন বিতর্ক বা সংশয় নেই। সংশয় নেই মডার্না ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া নিয়ে। চীন-রাশিয়ার পর এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন এখন তৃতীয় ট্রায়ালে রয়েছে এবং তাঁরা বলছে যে, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে তাঁরা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ট্রায়াল করবে। 

ইতোমধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের জন্য বিভিন্ন দেশ আগাম বুকিং দিচ্ছে এবং মডার্না ভ্যাকসিনের জন্যে অনেক দেশ বুকিং দিচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন নিবে তা নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং সরকারের মধ্যেও একটি চিন্তাভাবনা রয়েছে যে, আগে পাওয়া ভ্যাকসিন নিবে নাকি নিরাপদ ভ্যাকসিন নিবে।

কারণ ভ্যাকসিন আগে আসলেই যে সেই ভ্যাকসিন নিরাপদ হবে তেমন কোন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। বরং যেটা নিরাপদ ভ্যাকসিন হবে সেটা নেওয়া উচিত। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, কোন ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং কোন ভ্যাকসিনটি সবথেকে বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হচ্ছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশেরও পৃথক একটি গবেষণা দরকার এবং এই ব্যাপারে নজরদারি রাখা দরকার। যে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং দ্রুত আসবে সেই ভ্যাকসিনটির জন্য আমাদের আগাম বুকিং দিতে হবে এবং সরকারকে সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন সরকার নেবে সেই ব্যাপারে যেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি ঠিক তেমনিভাবে ভ্যাকসিনের জন্যে যে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া তা শুরু করতে পারেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশের এখন তিনটি কাজ করা দরকার। প্রথমত, বিশ্বের যে দেশগুলো ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে সেগুলোর দিকে নজর রাখা। দ্বিতীয়ত, যারা নিরাপদ এবং দ্রুত ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং সেই ভ্যাকসিনের জন্য যদি অর্থের দরকার হয় তাহলে আগাম বুকিং দেওয়া। তৃতীয়ত, গ্যাভির সঙ্গে সমন্বয় করে গরীব মানুষের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের নিশ্চয়তা করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভ্যাকসিনের কোন সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করেনি।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!