• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জনগণ এখন সরকারের গবেষণার গিনিপিগ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৪, ২০২০, ০৫:৩৬ পিএম
জনগণ এখন সরকারের গবেষণার গিনিপিগ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, করোনা ইস্যুতে দেশের জনগণ এখন সরকারের গবেষণার গিনিপিগ। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘লকডাউনসহ বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির যখন উন্নতি ঘটছে তখন আমাদের দেশে ভয়াবহ অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু সর্বোচ্চ পর্যায়ে। হাসপাতালে হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে কাতরাচ্ছে করোনা রোগীরা এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘চারিদিকে এত উন্নয়নের বুলি, অথচ বাংলাদেশে একটিও আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স নেই। টেস্টের অনুপাতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার সব দেশকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের সীমাহীন ব্যর্থতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। হিমালয় প্রমাণ ভুল সিদ্ধান্ত, অর্বাচীনতা, ব্যবসায়ী ও আমলাদের স্বার্থের কাছে নতজানু হয়ে পড়া এবং সরকারের একটি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে আরেকটি ডিপার্টমেন্টের সমন্বয়হীনতা মানুষের জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের কাছে জনগণের ছিটেফোঁটাও মূল্য নেই। জনগণ এখন তাদের গবেষণার গিনিপিগ। অবিবেচকের মতো সবকিছু খুলে দিয়ে এখন তামাশা দেখছে সরকার। তাদের ভাবখানা এমন, ‘করে খাও, বাঁচলে বাঁচো, মরলে মরো। আমরা তো গদিতে আছি আরামে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এখন গণপরিবহনে ভাড়ার নৈরাজ্য চলছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া আদায় করছে বাস কোম্পানিগুলো। নিরুপায় যাত্রা পথে নির্বিচারে পকেট কাটা হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। আর কোথায় স্বাস্থ্যবিধি, কোথায় সীমিত যাত্রী? বাস তো আগের মতোই চলছে গাদাগাদি করে। বর্তমানে লঞ্চঘাট, বাস স্ট্যান্ড-টার্মিনাল এবং রাস্তাঘাটের দৃশ্য ভয়াবহ, কোথাও স্বাস্থ্যবিধির ন্যুনতম বালাই নেই।’

‘কিছু পরিবহনের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বাসে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি যাত্রীদেরকেও সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে টার্মিনাল এবং বাসযাত্রা হতে পারে সংক্রমণ বিস্তারের কেন্দ্র’— গতকাল দেওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘কার্যত জনগণের জীবন নিয়ে বালখিল্য চলছে।’

তিনি বলেন, ‘নিজেদের দলীয় সিন্ডিকেটের পকেট ভরতে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালেন। ঘোষণা করেছিলেন মনিটরিং করবেন। কোথায় সেই মনিটরিং-মোবাইল কোর্ট? দুর্যোগকালে এমনিতেই সাধারণ মানুষ অর্থকষ্টে রয়েছে। কাজ-কর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট সবকিছু বন্ধ থাকায় গত কয়েক মাসে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তার ওপর পরিবহন ভাড়ার এই অকল্পনীয় নৈরাজ্য যেন প্রবল ঘুর্ণিঝড়ের মধ্যে মধ্য সাগরে লাইফ বোটবিহীন জাহাজের মতো।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের নিশ্চয় জানেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিশ্বের কোনো দেশে গণপরিবহন ভাড়া এক টাকাও বাড়েনি। এমনকি প্রতিবেশী দেশ-যাদের সাথে এই সরকারের নিবিড় সম্পর্ক তারাও ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এক্সিম ব্যাংকের এমডিকে গুলি করার অপরাধে সরকারে একান্ত আপনজন সিকদার গ্রুপের কেউ গ্রেফতার না হলেও গুলি করার সময় ব্যবহৃত বিলাসবহুল গাড়িটি আটক করা হয়েছে। এই সন্ত্রাসীবান্ধব সরকার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা দিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার দুই আসামিকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে রক্ষা করার পর গাড়ী আটকের ঘটনা সত্যিই বছরের সেরা তামাশা।’

রিজভী বলেন, ‘মানুষকে কতটা বোকা ভাবলে সরকার এই ড্রামা করতে পারে! সন্ত্রাসীদের কীভাবে রক্ষা করতে হয় আওয়ামী লীগ তা জানে। একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার আপাদমস্তক যখন অন্যায়, অনিয়ম ও অবিচারের কাছে বিক্রি হয়ে যায় তখন রাষ্ট্রের কর্ণধার’রা মাফিয়া শক্তির অনুচরে পরিণত হয়। সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে শিকদার ভ্রাতৃদ্বয়ের দেশ ত্যাগ তার জলন্ত প্রমাণ।’

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!