• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় দুই স্বার্থে বিএনপির সমাবেশের ডাক


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১০, ২০১৯, ০৫:২৯ পিএম
জাতীয় দুই স্বার্থে বিএনপির সমাবেশের ডাক

ঢাকা: জাতীয় দুই স্বার্থে সমাবেশ ঘোষণা করেছে বিএনপি। ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি ও বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশে দুই দিনের এই সমাবেশ। 

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতি নিধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি বাতিল ও আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আগামি  শনিবার ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর সদরে জনসমাবেশ করা হবে। একই দাবিতে রোববার দেশের সব জেলা সদরে জনসমাবেশ অনুষ্ঠান কর্মসূচি পালন করা হবে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ফেনী নদীর পানি, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার, বাংলাদেশের সমূদ্র উপকূলে যৌথ পর্যবেক্ষণের জন্য রাডার বসানোর অনুমতি, বাংলাদেশ থেকে এলপিজি গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে। অথচ বহু বছর ধরে তিস্তা এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে শুধু আলোচনাই হচ্ছে। 

বিএনপি এই স্থায়ী কমিটি সদস্য বলেন, এবারও শুধু আশ্বাস ছাড়া কোনো স্পষ্ট নিশ্চয়তা পায়নি। আসামের নাগরিক পঞ্জির প্রেক্ষিতে কয়েক লাখ আসামবাসীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যাপারে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্পষ্ট হুমকির মুখে দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির উল্লেখ নেই। তিনি অভিযোগ করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয় এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তখন তার পরিণতি দেশ ও দেশের জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকারক হয় তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল।

তিনি আরো বলেন, ভারতে পাটজাত দ্রব্যসহ অন্যান্যে পণ্য রফতানির উপর আরোপিত অন্যায় বাধা অপসারণে নিশ্চয়তা আদায় করতেও বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এতে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সফরের আগে সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি, দেশের জনগণকে কিছু জানতেও দেয়নি। এসব নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশিকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র।

স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তির প্রতিবাদে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ইতোমধ্যেই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তির প্রতিবাদে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে। সচেতন ছাত্র সমাজ আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে। সমালোচনায় ভীত সরকার তার দলীয় লাঠিয়ালদের দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী পোস্ট দেয়ার জন্য বুয়েটের ছাত্র আবরারকে খুন করেছে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড আন্দোলনের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে মাত্র, কাউকে ভীত করতে পারেনি। আজ গোটা দেশের জনগণ এই সরকারকে দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জনকারী এক ক্ষমতালিপ্সু শাসক বলে মনে করে। জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের সোনালী ফসল গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের মাধ্যমে এই দূরাচারী শাসকের পতন চায়।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কিন্তু এই সরকার যা করছে তাতে দেয়া নেয়ার বিষয়ে নেই। আছে শুধু দেয়ার। দেশের স্বার্থ হানিকর এমন অসম চুক্তির অধিকার জনগণ সরকারকে দেয়নি। কাজেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরের সময় স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই এবং দেশের ও দেশের স্বার্থ হানিকর সকল চুক্তি বাতিল চাই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,  নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ ।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!