• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএসইর ট্রেডিং সিস্টেমে বড় ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০, ০১:২১ এএম
ডিএসইর ট্রেডিং সিস্টেমে বড় ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ঢাকা : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন সম্পন্নের জন্য যে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস) সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় সেটিতে বড় ধরনের ত্রুটি পেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক গঠিত অনুসন্ধান কমিটি।

এক্সচেঞ্জটির ওয়েবসাইটও বেশি দুর্বল। এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুততার সঙ্গে নতুন অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আনার পাশপাশি ওয়েবসাইটে শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির সঙ্গে ডিএসইর পর্ষদের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকে ডিএসইর ট্রেডিং সিস্টেম ও ওয়েবসাইটের ত্রুটি অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির সদস্যরা তাদের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

জানা গেছে, বৈঠকে তদন্ত কমিটি ডিএসইর ওয়েবসাইট ও ট্রেডিং সিস্টেমের যেসব ত্রুটি বিচ্যুতি পেয়েছে সেগুলো বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ডিএসইর ওয়েবসাইটটি বেশ পুরোনো। এটি বর্তমান সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। একইসঙ্গে এটি দুর্বলও বটে। তাছাড়া পুঁজিবাজারে লেনদেন সম্পন্নের জন্য যে ওএমএস সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় সেটি ত্রুটিপূর্ণ। বাড়তি লেনদেনের চাপ নেয়ার সক্ষমতা নেই সিস্টেমটির।

এছাড়াও সিস্টেমটি চালু হয়েছে ৬ বছর হতে চলেছে। এ ধরনের সফটওয়ারের মেয়াদ সাধারণক ৮ থেকে ১০ বছর হয়ে থাকে। ফলে আগামী ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে ডিএসইর ওএমএস সিস্টেম হালনাগাত কিংবা নতুন সফটওয়্যার আনার ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে ডিএসইর পর্ষদকে দ্রুততার সঙ্গে নতুন ওএমএস সফটওয়্যার আনতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে ব্রোকারেজ পর্যায়ে ওএমএস সিস্টেম উন্মুক্ত করতে এক্সচেঞ্জটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যেসব ব্রোকারেজের নিজস্ব ওএমএস রয়েছে সেগুলোকে অনুমোদন দেয়ার জন্য ডিএসইকে বলা হয়েছে। আর যাদের ওএমএস সিস্টেম নেই তাদেরকে সেটি সরবরাহ করার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

তাছাড়া এক্সচেঞ্জটির তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যেও ঘাটতি খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এক্ষেত্রে যেসব কর্মকর্তা যেকাজের জন্য উপযুক্ত তাদেরকে সেখানে পদায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে। ডিএসইতে এখনো পর্যন্ত কোন আইটি অডিট হয়নি। এ ধরনের অডিট করা হলে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে সেটি অনুধাবন করা সম্ভব হয়। এজন্য নিয়মিতভাবে আইটি অডিট করার সুপারিশ করেছে কমিটি। তাছাড়া ডিএসইর কোন ডাটা রিকভারি সাইট নেই। এর ফলে যে কোন দুর্ঘটনার কারণে ডিএসইর ডাটা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুঁজিবাজারের কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যহত করবে। এমনকি পুঁজিবাজারের লেনদেনও বন্ধ হয়ে যাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। ফলে ডিএসইকে দ্রুত ডাটা রিকভারি সাইট স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

ডিএসইর মোবাইল অ্যাপের বিষয়ে তদন্ত কমিটি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ ধরনের একটি অ্যাপ আরো মানসম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল। তদন্তকালীন সময়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে অ্যাপের মানোন্নয়নে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন ওএমএসের সঙ্গে নতুন মোবাইল অ্যাপ চালু করতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

কমিশনের কর্তকর্তারা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে যে গতি এসেছে তাতে সামনের দিনগুলোতে লেনদেন ও বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ অনেক বাড়বে। তাই বাড়তি লেনদেনে চাপ নেওয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে স্টক এক্সচেঞ্জের।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট ওয়েবসাইটের উন্নত সংস্করণ চালু করে ডিএসই। সেসময় বলা হয়েছিল, আপডেটেড ওয়েবসাইটটি বিনিয়োগকারী বান্ধব ও অত্যন্ত রেসপন্সিভ হবে। কিন্তু আপডেটেড ওয়েবসাইট চালুর পর থেকেই দেখা দেয় বিপত্তি। ওয়েবসাইটে প্রবেশে সমস্যা, ঠিকমত তথ্য হালনাগাদ না হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।

এরপরে বিএসইসির পক্ষ থেকে ২৪ আগষ্ট ডিএসইর ওয়েবসাইট ও ট্রেডিং সিস্টেমের ত্রুটি অনুসন্ধানের জন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে।

সোনালীনিউজ/এলএ

Wordbridge School
Link copied!