• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কথিত প্রেমিকসহ তিন বন্ধু মিলে

দুই বোনকে দলবেঁধে ধর্ষণ, এক বোনের আত্মহত্যা


রংপুর প্রতিনিধি এপ্রিল ২৪, ২০১৯, ০৭:২৩ পিএম
দুই বোনকে দলবেঁধে ধর্ষণ, এক বোনের আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

রংপুর : মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে উপজাতি এক স্কুলছাত্রী ও তার ছোট বোনকে ধর্ষণ করেছে কথিত প্রেমিক ও তার তিন বন্ধু। এ ঘটনায় বাড়িতে ফিরে লজ্জা এবং ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে বড় বোন।

প্রথমে বিষয়টি অজানা থাকলেও ওই উপজাতি মেয়েটির মোবাইল ফোনে প্রতারক প্রেমিকের ছবি ও তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা ‘বিশ্বাস ঘাতক’ আর ‘মৃত্যুর পর কবরে দু’মুঠো মাটি দেয়ার’ ক্ষুদে বার্তায় বেরিয়ে আসে আত্মহত্যার পেছনের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ঘটনার পাঁচদিন পর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে প্রেমিক রতনসহ তিনজনকে আসামি করে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মিঠাপুকর থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে।

স্কুলছাত্রীর সহপাঠী ও প্রতিবেশী ছাত্রীরা জানায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর পশ্চিমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ওই উপজাতি মেয়েটি।

রংপুর শহরের মাহিগঞ্জ এলাকার ঢোলভাঙা গ্রামের বুধুয়া মিনজির ছেলে রতন মিনজির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১৮ এপ্রিল মোবাইল ফোনে দেখা করতে তাকে ডাকে রতন। ওই দিন বিকেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী চাচাতো বোনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়।

এরপর সরাসরি প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে ঢোলভাঙা গ্রামে যায়। সেখানে রতন ও তার তিন বন্ধু মিলে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে দুই বোনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

পরদিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা বাড়ি ফিরে। তখন তারা অসুস্থ থাকলেও ঘটনাটি কাউকে জানায়নি। এরপর লজ্জা এবং ক্ষোভে বিকেল ৫টার দিকে শয়ন কক্ষে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে বড় বোন।

আত্মহত্যাকারী স্কুলছাত্রীর ছোট বোন জানায়, অনেকদিন ধরে রতন মোবাইল ফোনে তার দিদিকে বিরক্ত করত, প্রেমের প্রস্তাব দিত। কিন্তু দিদি তাতে রাজি হয়নি। পরে নানা কৌশলে প্রেমের ফাঁদে পড়ে যায়। এরপর থেকে তারা মোবাইলে নিয়মিত কথা বলত। রতনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে হয়েছে সর্বনাশ।

ধর্ষণের শিকার দুই স্কুলছাত্রীর মাসহ প্রতিবেশীরা বলেন, ধর্ষক পক্ষ হুমকি দিচ্ছে, বড় বোন আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে ধর্ষণের শিকার অন্যজনকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয় তারা। এ ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খোলেনি। ধর্ষণের মামলাও করেনি।

এদিকে, ঘটনার পাঁচদিন পর আত্মহত্যাকারী ছাত্রীর ছোট বোন বাদী হয়ে কথিত প্রেমিক রতনসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছে।

মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আলী বিশ্বাস বলেন, উপজাতি স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেছি। ওই সময় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এরপরও মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়টি জানার পর তার স্বজনকে ডেকে এনে মামলা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষক রতনের বাবা বুধুয়া মিনজিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!