• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত


নিউজ ডেস্ক আগস্ট ১২, ২০১৯, ০৯:২৮ পিএম
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

ঢাকা : উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

যার প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দিলো আবহাওয়া অফিস : হঠাৎ করেই মাথার ওপরে যেন ঘন মেঘের ঘনঘটা। আবার কখনও অন্ধকার হয়ে মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টি। এখনকার আকাশ ও প্রকৃতির চিত্র যেন এমনই। এদিকে আবার ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তাও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। একইসঙ্গে বন্যা হওয়ারও শঙ্কা করছে আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, অক্টোবরেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। অক্টোবরে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে অন্তত একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আগস্ট থেকে অক্টোবর– এ তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মো. আরিফ হোসেন বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুগত যে বৈশিষ্ট্য আছে, সেটার পরিসংখ্যান বলে যে, অক্টোবর-নভেম্বরে ঝূর্ণিঝড় হয়। এটা যে হবেই এমন না। তবে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ঊর্ধ্বাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়ার মানচিত্র, জলবায়ু মডেল, জলবায়ু অনুমানযোগ্যতা সরঞ্জাম, জাপান আবহাওয়া এজেন্সি (জেএমএ), ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্ট (ইসিএমডব্লিউএফ), এপেক (APEC) জলবায়ু কেন্দ্র এবং বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা অনুমোদিত গ্লোবাল প্রডিউসিং সেন্টার (জিপিসিএস) থেকে প্রাপ্ত নিউমেরিক্যাল ওয়েদার প্রিডিকশন (এনডব্লিউপি) মডেল পূর্বাভাস, এসওআই (এল নিনো/লা নিনা’র অবস্থা) ইত্যাদির বিশ্লেষণ করে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদী এ পূর্বাভাসে আগস্টে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। আগস্টের বিষয়ে এতে বলা হয়েছে, এ মাসে বাংলাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে দুই থেকে তিনটি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি বর্ষাকালীন নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে আগস্টে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

সেপ্টেম্বরের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। উত্তরাঞ্চলে ৩-৫, পূর্বাঞ্চলে ১-৩ দিন বন্যার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যের ভিত্তিতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলছেন, নিম্নচাপের কারণে দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মাঝামাঝি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর আশপাশের মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি সমতল থেকে দ্রুত বাড়তে পারে। ফলে এ অঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলার কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদের (এক থেকে তিনদিন) বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া আরও বলেন, দেশের প্রধান নদ-নদী যেমন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকায় চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বন্যার ঝুঁকি নেই। তবে চলতি মাসের ১৬ থেকে ১৭ তারিখ থেকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি সমতলের অংশে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হতে পারে।

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি বা কোনো কোনো জায়গায় সাময়িকভাবে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে দেশের উত্তর ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়া জেলার কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদে (তিন থেকে পাঁচদিন) বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে তিস্তা নদীর পানি সমতলে দ্রুত বাড়তে পারে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!