• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিপদ বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, সমুদ্রে অদ্ভূত ফেনা


সোনালীনিউজ ডেস্ক মে ১৭, ২০২০, ০৫:৫৯ পিএম
বিপদ বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, সমুদ্রে অদ্ভূত ফেনা

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে শক্তি সঞ্চয় করে ক্রমান্বয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে আম্ফান। ভারতের আবহাওয়া দফতর বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঝড় আগামী দু'দিনের মধ্যে প্রলয়ঙ্করী রূপ ধারণ করতে পারে; তখন ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৪৫ থেকে ১৭০ কিংবা ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে আঘাত হানতে পারে।

রোববার ভারতের আবহাওয়া দফতরের (আইএমডি) পূর্বাভাসে বলা হয়, আম্ফান আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) এবং ১৮ মে সকালের মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হতে পারে। অতি প্রবল হয়ে উঠলে এই ঝড়ের গতিবেগ আঘাত হানার সময় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৭০ কিলোমিটার বা তারও বেশি হতে পারে।

তবে মঙ্গলবার নাগাদ আরও শক্তি সঞ্চয় করে এই ঝড় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সেই সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার কিংবা তারও বেশি।

এর আগে আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তর-উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অগ্রসর হতে পারে। এরপর সেখান থেকে ১৮ থেকে ২০ মের মধ্যে সেটি পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন ওডিশ্যা উপকূলের দিকে মোড় নিতে পারে। ১৮ মে সন্ধ্যা থেকে ওডিশ্যার বিভিন্ন প্রান্তে হালকা থেকে তীব্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আতঙ্কের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় শহর দিঘার সমুদ্রে অদ্ভূত ফেনা দেখা গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বরফ পড়ে আছে। কিন্তু একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলেই বোঝা যায় যে এগুলি বরফ নয়, আসলে সমুদ্রের ফেনা।

আবহাওয়া দফতর ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে যে, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে পারে। তার আগে দিঘার সমুদ্রে এমন সাদা ফেনা দেখা যাওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে এই ফেনার কোনও সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে উপকূলবর্তী স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা মানস জানান, এর আগে দিঘার সমুদ্রে এত সাদা সাদা সাবানের মতো ফেনা কখনও দেখেননি। তিনি বলেন, এগুলো দেখে খুব অবাক হয়েছি। কোত্থেকে এমন ফেনা আসছে তা জানি না।

তবে সমুদ্র বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ঘটনা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। এ নিয়ে ভয় পাওয়ারও কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, লকডাউনের ফলে সমুদ্র এখন অনেকটা দূষণমুক্ত। আগে দূষণের জন্য সমুদ্রের তলদেশের সেডিমেন্ট সমুদ্রের নিচের দিকেই থাকত। কিন্তু এখন দূষণ না থাকায় সেসব উপাদান পানির উপরের স্তরে চলে আসছে। আর আম্ফানের প্রভাবে সমুদ্রের ওপরে বাতাসের গতিবেগ এখন অনেক বেড়েছে। যার ফলে বাতাসের ধাক্কায় সমুদ্রের পানিতে উৎপন্ন হচ্ছে ফেনা। যা আছড়ে পড়ছে উপকূলে।

এদিকে, দিঘার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আগে সমুদ্রের ঢেউ বা রোলিং কম ছিল। তাই ফেনা কম উৎপন্ন হত। এখন সমুদ্রের পানিতে সার্কুলেশন অনেক বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বেড়েছে সমুদ্রের ওপরে বাতাসের গতিবেগ। তাই অনেক বেশি ফেনা বেড়েছে।

তবে শুক্রবার রাতের তুলনায় শনিবার ফেনা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফেনার পরিমাণ আরও কমেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। লকডাউন চলায় দীঘা উপকূল এখন একেবারেই জনমানব শূন্য।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!