• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএসে বাছাই পদ্ধতির পরিবর্তন করুন


আবু সাঈদ সজল জুলাই ২, ২০২০, ০২:০৮ পিএম
বিসিএসে বাছাই পদ্ধতির পরিবর্তন করুন

উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। তখন সবারই লক্ষ্য থাকে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করবেন। কারন, উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো একটা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া, সে বিষয়ে জ্ঞান সৃষ্টি, জ্ঞান উন্নয়ন কিংবা জ্ঞানের সম্প্রসারণ। পড়াশুনা শেষ করে একজন শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবেই তার চাহিদামাফিক একটি চাকরি প্রত্যাশা করে। কিন্তু বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বাচাই পদ্ধতি ৪টি বছর অনার্সের বিষয়টির তেমন কোনো মূল্যায়নই দিচ্ছে না। এতে করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে  ভর্তি হয়ে মেজিস্ট্রেট আর এমবিবিএস পড়ে ফরেন ক্যাডার হচ্ছেন। এসব কারণে ক্লাসের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী ক্লাস এ লেকচার না শুনে, ক্লাস-গবেষণায় মনোযোগ না দিয়ে এমপিথ্রি এবং ওরাকলের মতো সিরিজ বই মুখস্ত করছেন। 

তাহলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এতো এতো ডিপার্টমেন্ট না খুলে 'ডিপার্টমেন্ট অব বিসিএস' খুললেই হয়। দশ সেমিস্টারে এমপিথ্রি, প্রফেসর্স কিংবা ওরাকল এর সিরিজ গুলো সিলেবাসে রাখা চলে। আমরা সবাই 'বিসিএস বিভাগে' পড়ে ক্যাডার হয়ে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করতে সক্ষম হতাম। 

মেডিকেলের শিক্ষার্থীরাও তার বই বাদ দিয়ে এমপিথ্রি পড়ছেন। তাহলে আমাদের চিকিৎসা করবেন কে সেটা ভেবেছেন কি?ছাত্রছাত্রীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, সমস্যা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার উদ্দেশ্য কী, বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য কোন দক্ষতা গুলো দরকার সেটা পিএসসি কে নতুন করে ভাবতে হবে। এই পরীক্ষা এমন ভাবে সাজানো দরকার যাতে করে বাংলাদেশের লাখ লাখ তরুণের দেশ ও জাতিকে দেয়ার মতো জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান ১২ টি বছর শুধুমাত্র ঐ তথাকথিত সিরিজ পড়ে কাটাতে না হয়। এতে শিক্ষার্থীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় অনার্স এবং মাস্টার্সের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যে যেই বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স করবে তার দক্ষতানুযায়ী সেক্টর খুলে ওই সেক্টরে তাকেই নিয়োগ দিতে হবে। এতে করে মেডিকেলের শিক্ষার্থী ফরেন ক্যাডার, আর  ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ে মেজিস্ট্রেট হবে না। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনায় স্ব স্ব বিষয়ের প্রতি মনোযোগ বাড়বে, বাড়বে ছাত্রছাত্রীদের বহুমুখীতা, সৃজনশীলতা আর উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা ।

ত্রুটিপূর্ণ বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি আর বিসিএস হুজুগ দেশ ও জাতির জন্য যে অশনি সংকেত সেটা আমাদের নীতি নির্ধারকরা বুঝতে না পারলে দেশের উচ্চশিক্ষায় শুধু ধস ই নামবে না বিশ্ব রেঙ্কিং এ আমাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কে দূরবীন দিয়ে ও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কয়জন ক্যাডার হলো সেই রেঙ্কিং দেখে আত্মতৃপ্তিতে ভুগবে ছাত্রছাত্রীরা।

প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে তার নিজস্ব সাবজেক্ট ভালোভাবে পড়তে দিন, বিসিএস এর বাছাই পদ্ধতি পরিবর্তন করুন যাতে কাউকে এমপিথ্রি মুখী হতে না হয়। 

লেখকঃ শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। 
সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত ভোর.কম।

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!